বাক্স ভেঙে দরপত্র ছিনতাই: ওসিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

 

জয়পুরহাটজয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদের প্রশাসনিক ভবন ও হলরুম অপসারণে দরপত্র জমা দেওয়ার পর তা বাক্স ভেঙে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদের প্রকৌশল বিভাগের সামনে থেকে দরপত্র ছিনতাইয়ের এই ঘটনা ঘটে। এদিকে, চিঠি দেওয়ার পরও দরপত্র কার্যক্রমে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ নিয়োগ না দেওয়ায় ক্ষেতলাল থানার ওসিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ  দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা গেছে, ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদের প্রশাসনিক ভবন ও হলরুম অপসারণের জন্য দরপত্রের মাধ্যমে ডাকে অংশ নেওয়ার বিজ্ঞপ্তি  দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত ৭টি স্থানে দরপত্র জমা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয় উপজেলা পরিষদ। সকাল ১১টার দিকে ক্ষেতলাল বাজারের ব্যবসায়ী তুহিন ইসলাম ও পলাশ হোসেন উপজেলা প্রকৌশল অফিসে দরপত্র জমা দিতে গেলে পৌর ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়। বাধা উপেক্ষা করে তারা দরপত্র জমা দিয়ে চলে গেলে ছাত্রলীগকর্মীরা উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়িচালক গোলাম মোস্তফাকে মারধর করে। এরপর তারা প্রকৌশল অফিসের সামনে রাখা দরপত্র বাক্স ভেঙে দরপত্র ছিনিয়ে নিয়ে অফিসের নিচে বাক্স ফেলে দিয়ে যায়। এ সময় সেখানে কোনও পুলিশ সদস্য ডিউটিতে ছিলেন না। ঘণ্টাখানেক পর গাড়িচালক মোস্তফার চাচাতো ভাই তুহিন ইসলাম মারধরের জের ধরে দলবল নিয়ে এসে ক্ষেতলাল পৌরভবনের নিচের একটি দোকানে ছাত্রলীগ নেতা শুভ ও রতনকে মারধর করে।  

ক্ষেতলাল বাজারের মেসার্স শিমু ট্রেডার্সের মালিক এসএম তুহিন ইসলাম বলেন, ‘আইএফআইসি ব্যাংক দিনাজপুর শাখায় ৭৫ হাজার টাকার দু’টি বিডিসহ দরপত্র প্রকৌশল অফিসের সামনে রাখা বাক্সে জমা দিয়ে আসি। পরে খবর পাই ছাত্রলীগ নেতা রতনসহ সন্ত্রাসীরা বাক্স ভেঙে দরপত্র ছিনতাই করেছে। বিষয়টি সুরাহার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।’

ক্ষেতলাল পৌর ছাত্রলীগ নেতা রুবেল হোসেন রতন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘দরপত্রের বাক্স ভাঙচুর অথবা দরপত্র ছিনতাই করার অভিযোগ ঠিক নয়।’ এ সময় তিনি ব্যবসায়ী তুহিন ইসলামের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মারধরের অভিযোগ করেন।

ক্ষেতলাল উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, ‘অফিসের সামনে রাখা দরপত্র বাক্স দুবৃত্তরা অফিসের নিচে ফেলে দিয়ে গেছে। বেলা ১২টার দিকে বাক্সটি উদ্ধার করার পর সেখানে কোনও দরপত্র পাওয়া যায়নি। তবে ক্ষেতলাল থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ সিল করা অবস্থায় দু’টি দরপত্র উদ্ধার করার কথা মোবাইল ফোনে আমাকে জানিয়েছেন।’  

ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার বলেন, ‘দরপত্র কার্যক্রমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ নিয়োগ করার জন্য ওসিকে চিঠি দেওয়ার পরও পুলিশ নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় ওসিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

ক্ষেতলাল থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ সিল করা দু’টি দরপত্র উদ্ধার করার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘পুলিশ চাওয়ামাত্র নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’ কারণ দর্শানোর কোনও নোটিশ পেয়েছেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কোনও নোটিশ পাইনি।’