সাদুল্যাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের বকশিগঞ্জ, বউবাজার, হিঙ্গারপাড়া, খামারপাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাঠকে মাঠে ফলছে সবজি। এর মধ্যে রয়েছে পটল, বেগুন, শিম, শসা, ঝিঙ্গা, ঢেঁড়স, বরবটি, মাছ আলু (পুরআলু), মিষ্টি কুমড়া ও চাল-কুমড়া। এছাড়া এখানকার চাষিরা চাষ করছেন আদা, হলুদ ও মরিচ। চাষিরা জানান, এসব সবজি চাষে তারা জৈব সার ব্যবহার করেন। তবে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করেন না।
তবে এসব উপজেলার চাষিদেরই অভিযোগ, কিটনাশক ছাড়া সবজি চাষে সফলতা পেলেও কৃষি বিভাগ থেকে তারা কখনও কোনও পরামর্শ বা সহযোগিতা পাননি।
সাদুল্যাপুরের ধাপেরহাট ইউনিয়নের সাদিপাড়ার সবজি চাষি নজরুল ইসলাম জানান, মাটি উর্বর হওয়ায় কৃষকরা সবজির আবাদ বেশি করছেন। উৎপাদিত সবজি বিক্রি করে তারা লাভের মুখও দেখছেন। তিনি বলেন, ‘চলতি মৌসুমে আমি একই জমিতে হলুদ, মরিচ ও বেগুন চাষ করেছি। ইতোমধ্যে বেগুন ও মরিচ ধরতে শুরু করেছে। ১৫-২০ দিনের মধ্যে আমি জমি থেকে বেগুন ও মরিচ তুলে বাজারে বিক্রি শুরু করব। এছাড়া ৬০ দিনের মধ্যে হলুদও বিক্রি করতে পারব।’
জমি থেকে আগাম জাতের বেগুন তুলছিলেন আনোয়ারা বেগম। তিনি বলেন, ‘জমিতে বেগুন ভালো হয়েছে। বাজারে বিক্রি করে দামও ভালো পাচ্ছি। বার মাসেই আমি জমিতে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করি। সবজি বিক্রির টাকায় সংসার চলে। এই টাকায় ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়ে বিয়ে দিয়েছি।’ তিনি জানান, তার গ্রাম সাদিপাড়ার অনেকেই সবজি চাষে সফলতার মুখ দেখেছেন। স্বচ্ছলতা ফিরেছে তাদের সংসারে।
সাদিপাড়ার সবজি চাষি সোবহান উদ্দিন, ফয়জার রহমান ও আনারুল ইসলাম জানান, জমিতে চাষ করা নানা জাতের সবজির ফলন ভালো হয়েছে। আর দুই-তিন সপ্তাহ পর সবজি হাট-বাজারে বিক্রি শুরু হবে।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আ.ক. মো. রুহুল আমীন বলেন, ‘জেলায় সবজির উৎপাদন দিন দিন বাড়ছে। কৃষকরা নিজ উদ্যোগে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছেন। জেলার সব সবজি চাষিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাসহ সহযোগিতা করা হবে। কৃষি বিভাগে জনবল সংকট থাকায় প্রান্তিক কৃষকদের কাছে যাওয়া হয় না। তবে কৃষকদের সবসময় মোবাইল ফোনে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবারের মৌসুমে জেলার সদর উপজেলাসহ সাত উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে আট হাজার হেক্টর জমিতে নানা জাতের সবজির চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে সাদুল্যাপুর উপজেলায় বেশি সবজির চাষ হয়েছে। এ বছর সাদুল্যাপুর উপজেলায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। এ উপজেলার মধ্যে ধাপেরহাট ইউনিয়নে সবজির আবাদের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি।’
আরও পড়ুন:
‘শান্তি-নিরাপত্তায় বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে’
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন শেখ রেহানা