সীমান্তে ভারত-বাংলাদেশের স্কুল শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা

পঞ্চগড়ে সীমান্তে ভারত-বাংলাদেশের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মিলনমেলাপঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি নোম্যান্স ল্যান্ডে দুই বাংলার ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মৈত্রীবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিজয় দিবস উপলক্ষে শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকালে ওই অনুষ্ঠান হয়। পঞ্চগড়ের হান্নান শেখ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে জড়ো হন বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে। আর ওপারে ফুলবাড়িতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শিলিগুড়ি নেতাজি জিএসএফপি স্কুলের শিক্ষকের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয়। তাদের মধ্যে ফুলেল শুভেচ্ছা ও মিস্টি বিতরণ চলে।

পরে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষীদের উপস্থিতিতে নোম্যান্স ল্যান্ডে একত্রিত দুই বাংলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। এ সময় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জাতীয় সঙ্গীতে সুর মেলান স্থানীয় বাংলাদেশিরা। পরে ভারতীয় জাতীয় সঙ্গীতও গাওয়া হয়। এসময় বাংলাদেশের পক্ষে পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধান, পঞ্চগড়-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন, পঞ্চগড় চেম্বারের প্রেসিডেন্ট আব্দুল হান্নান শেখ, বাংলাবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যান কুদরত ই খুদা মিলন এবং ভারতের পক্ষে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা দেবাশীষ প্রামাণিকসহ সে দেশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে দেবাশীষ বাংলাদেশের দুই সাংসদসহ অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে দেন। বাংলাদেশের বর্ডার গাড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এই মৈত্রী বন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।পঞ্চগড়ে সীমান্তে ভারত-বাংলাদেশের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা

শিলিগুড়ির নেতাজি জিএসএফপি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুস্মিতা সেন, তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নিশিকেতা ঘোষ, চন্দনা রায়, শ্রুতি ব্যানার্জি ও সৃজা শাহা, শিক্ষক শ্বাসতি রায় ও মৌসুমী চক্রবর্তী জানায়, ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবস সম্পর্কে তারা জানে। এবার বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিলিত হতে পেরে তারা খুব খুশি। ফুল ও মিষ্টি পেয়ে তাদের খুব ভালো লেগেছে।

পঞ্চগড়ের হান্নান শেখ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সিরাজুম মুসফিরাত মিতু, সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাদিয়াতুল ইসলাম মাহিন ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসপিয়া জানায়, বিজয় দিবসের দিনে ভারতের স্কুলশিক্ষার্থীদের সঙ্গে কিছু সময় কাটাতে পেরে তারা খুব খুশি। বাংলা ভাষায় তাদের সঙ্গে কথা বলতে পেরে তারা আনন্দিত। তারা চায়, প্রতিবছর আরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে এমন আয়োজন করা হোক।

পঞ্চগড়-১ আসনে সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধান বলেন, ‘বিজয়ের আনন্দে বাংলাদেশ ও ভারতের বাংলা ভাষাভাষী স্কুলের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে দুই বাংলাকে একই সুতোয় বেঁধে রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছে। পল্লী কবি জসিম উদ্দিন ও জীবনানন্দ দাসের কলমে এপার এবং ওপার বাংলার ছবি ফুটে উঠেছে। বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথের লেখায় দুই বাংলার মেলবন্ধন অনেক আগেই ঘটেছিল। বইয়ের পাতায় তা জানতে পারলেও বর্তমান প্রজন্মের কাছে দুই দেশের সংস্কৃতি এখনও অজানা রয়েছে। অথচ দুই বাংলার ভাষা, সংস্কৃতি এক। শুধু সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া সরিয়ে রাখলেই কোনও ভেদাভেদ থাকবে না। আর এই ভেদাভেদ ঘোচাতে বিজয় দিবসে এই আয়োজন।’