লোডশেডিংয়ে সৈয়দপুরে বিপর্যস্ত বোরো চাষ

 

ক্ষেতনীলফামারীর সৈয়দপুরে চলতি মৌসুমে সেচ নালায় পর্যাপ্ত পানি না থাকায় এবং লোডশেডিংয়ের কারণে বিপর্যস্ত ইরি-বোরো চাষাবাদ। সেচ ক্যানেলের দু’পাশে প্রায় ২২ হাজার কৃষকের আবাদি জমি রয়েছে। ক্যানেলে পানি না থাকায় এসব জমিতে সেচ দিতে বিদ্যুৎচালিত নলকূপের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। কিন্তু ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে চাষাবাদ।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ৮ হাজার ২৬৪ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

জানা যায়, দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প জেলার ডিমলা-ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজের ক্যানেলের সঙ্গে যুক্ত করে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৯৯১ সালে সৈয়দপুরে দুটি সেচনালা তৈরি করে। এর একটি সৈয়দপুর উপজেলার কাদিখোল হয়ে কামারপুকুর পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার বিস্তৃত। অন্যটি, সিপাইগঞ্জ থেকে পশ্চিম আইসঢাল পর্যন্ত সাত কিলোমিটার বিস্তৃত। এই সেচ ক্যানেল দু’টির আওতায় কাগজে-কলমে রয়েছে চার হাজার হেক্টর আবাদি জমি।

উপজেলার সিপাইগঞ্জ এলাকার কৃষক আবুল হোসেন, আজিজ মিয়া বলেন, সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে সেচ ক্যানেল দুটি তৈরি করেছে। কিন্তু একদিনের জন্যও আমরা সেচ নালায় পানির প্রবাহ দেখিনি। এ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডে বহুবার অভিযোগ করেছি কিন্তু তারা কোনোদিন প্রকল্প এলাকা দেখতে আসেননি। এ অবস্থায় ইরি-বোরো আবাদে সৈয়দপুরের কৃষকদের পুরোপুরি নির্ভর করতে হচ্ছে বিদ্যুৎচালিত নলকূপের সেচ সুবিধার ওপর।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুরে বিদ্যুৎচালিত ৬৯৮টি নলকূপ ও ১৩টি গভীর নলকূপ রয়েছে। আর পল্লী বিদ্যুতের অধীনে রয়েছে ৫৩টি গভীর নলকূপ। এ ছাড়াও বরেন্দ্র প্রকল্পের ৬৬টি ও কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের একটি মিলিয়ে মোট ৮৩১টি নলকূপ রয়েছে।

এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, এ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে প্রায় ২২ হাজার (ইরি-বোরো) কৃষক। কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, গত বছর সৈয়দপুর উপজেলা শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় আসার পর পিক আওয়ার এবং অফ পিক আওয়ার মিলিয়ে ইরি-বোরো মৌসুমে ১০ থেকে ১৫ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কারণে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে সেচ ব্যবস্থা। ঘন ঘন লোডশেডিং আর বিদ্যুতের অভাবে সময়মত ক্ষেতে সেচ দিতে পারছে না কৃষকরা।

এ ব্যাপারে সৈয়দপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সৈয়দপুর গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বড় পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ আরও কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেরামত কাজ চলছে।
তিনি বলেন, জাতীয় গ্রিড থেকে যেভাবে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে সেভাবেই ইরি-বোর চাষে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। এ পরিস্থিতি সাময়িক,খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা হবে।