পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ

ডামুড্যা কলেজ মাঠে বৈশাখী টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার ফয়সাল আহমেদের জানাজা

এক সপ্তাহ আগে নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় ছেলে ফয়সাল আহমেদের মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর থেকে লাশের জন্য অপেক্ষা করছিলেন সামসুদ্দীন সরদার। অবশেষে লাশ এসেছে। কিন্তু নিজের ছেলেকে নিজেই চিনতে পারছেন না। তার সেই সুঠামদেহী সুন্দর ছেলেটি পুড়ে কালো হয়ে গেছে। কাঁদতে কাঁদতে শুকিয়ে যাওয়া সামসুদ্দীন সরদারের চোখ নিজের অজান্তেই অশ্রুসজল হয়ে গেছে। জানাজার সময় ঘনিয়ে আসায় চোখ মুছে উঠে দাঁড়ান সামসুদ্দীন সরদার। নির্বাক চোখে হেঁটে চলেছেন ছেলের মরদেহ বহনকারী কফিনের সঙ্গে। মঙ্গলবার সকালে ছেলের কফিনের সঙ্গে বৃদ্ধ বাবা সামসুদ্দীন সরদারের এই হেঁটে আসা দেখে উপস্থিত সবার চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে যায়।

সকাল ১০টা ৫ মিনিটে ডামুড্যা কলেজ মাঠে বৈশাখী টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার ফয়সাল আহমেদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সহস্রাধিক মানুষ এ জানাজায় অংশ নেন। তবে অনেকে ফয়সালকে শেষ বারের মতো দেখতে চাইলেও লাশ বিকৃত হওয়ায় কাউকে দেখানো হয়নি। জানাজা শেষে ডামুড্যা পৌরসভার নিজ বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার ফয়সাল আহমেদের জানাজা শেষে দাফনের জন্য লাশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে

 

এ সময় ডামুড্যা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুজি আক্তার, ডামুড্যা উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন, ডামুড্যা পৌরসভার মেয়র হুমায়ুন কবির বাচ্চু ছৈয়াল, ওসি নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাহাদুর বেপারি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ঢাকা থেকে ফয়সালের মরদেহ রাত ৩টায় তার গ্রামের বাড়ি ডামুড্যা এসে পৌঁছায়। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও নিহত ফয়সালের আত্মীয় বাহাদুর বেপারি ঢাকা থেকে ফয়সালের মরদেহ গ্রহণ করে ডামুড্যা নিয়ে আসেন। এ সময় বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে যায়। দূর-দূরান্ত থেকে আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষিরা ফয়সালকে এক নজর দেখার জন্য বাড়িতে উপস্থিত হলেও মরদেহ পুড়ে বিকৃত হয়ে যাওয়ায় সবাইকে দেখতে দেওয়া হয়নি।

আরও পড়ুন: তৃতীয় জানাজা শেষে রিমনের দাফন সম্পন্ন