স্থানীয়দের অভিযোগ, কয়েক বছর ধরে একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় কয়েকটি গ্রুপ বালু তোলার কাজ করছে। বিষয়টি বেশ কয়েকবার প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
এলাকাবাসী জানায়, চণ্ডিপুর ও সমসপাড়া দুটি মৌজার একাধিক জায়গায় কয়েক বছর ধরে কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করে লাখ লাখ টাকার বালু তুলে বিক্রি করছে সংঘবদ্ধ একাধিক সিন্ডিকেট। নদী থেকে বালু তুলে স্তূপ করে রাখা হয় ফসলি জমি, বসতবাড়ির উঠান আর রাস্তার ধারে। দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকা থেকে বালু তোলায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক, কাটাখালি ব্রিজ, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ ও বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। প্রতিবছর বর্ষায় তীব্র হয় করতোয়ার ভাঙন। কিন্তু নদীর মাঝ থেকে অবাধে বালু তোলায় বর্ষায় ফসলি জমি ও বসতবাড়ি ভাঙনের আশঙ্কায় আছেন নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ।
সমসপাড়ার গ্রামের ফরিদুল ইসলামের অভিযোগ, প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন চললেও প্রতিবাদ করার সাহস পান না স্থানীয়রা। স্থানীয় প্রশাসনের যোগসাজশে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় অবাধে বালু তুলে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। বালু উত্তোলন বন্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ ভুক্তভোগীরা।
চণ্ডিপুর ও সমসপাড়া সড়কের ভ্যানচালক আকতার হোসেন বলেন, ‘ট্রাক্টর চলাচল করায় রাস্তায় গর্ত হয়ে গেছে। তাই ভ্যানে যাত্রীদের নিয়ে চলাচল করতে সমস্যা হয়।’
বালু উত্তোলনে জড়িত ব্যবসায়ীর মধ্যে কালাম মিয়ার দাবি, প্রতিদিন নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এছাড়া রাস্তা দিয়ে ট্রাক চলাচল করতেও টাকা দিতে হয়। এসব টাকা স্থানীয় বাবু নামের একজনকে দিতে হয়। তিনি সব ম্যানেজ করেন।
এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনার ভূমি রাফিউল আলম বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বালু উত্তোলন বন্ধ করাসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া অব্যাহত রয়েছে। দ্রুত বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অভিযান চালানো হবে।
করতোয়া নদী নয়, ঘাঘট, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীসহ গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকার আবাদি জমি ছাড়াও বেশিরভাগ জনবসতি এলাকা থেকেও অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করে আসছেন প্রভাবশালীরা। প্রশাসন মাঝে মধ্যে অভিযান চালালেও নিয়মিত তদারকির অভাবে সিন্ডিকেটের অপতৎরতা কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না।