‘বন্দুকযুদ্ধের’ একদিন আগে বাবুকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ, অভিযোগ পরিবারের

মাদক ব্যবসায়ী বাবুদিনাজপুরের বিরল উপজেলার সরদারপাড়া নামক এলাকায় রবিবার (২০ মে) ভোররাতে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে বাবু ওরফে গালকাটা বাবু (৪৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়। তবে পরিবারের দাবি, বন্দুকযুদ্ধ নয়, ঘটনার একদিন আগেই তাকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, বাবু মাদকের তালিকাভুক্ত আসামি। তার বিরুদ্ধে ৯টি মাদক মামলা রয়েছে।

শুধু তাই নয়, বন্দুকযুদ্ধে ঘটনাস্থল থেকে ২টি সামুরাই, ৪টি ককটেল, একটি পিস্তল ও ১৯৩ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশের দুই কনস্টেবল আহত হয়।

বিরল থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ফরাক্কাবাদ ইউনিয়নের তেঘড়া নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা বাবু দীর্ঘদিন ধরেই মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল। মাদক ব্যবসার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ৯টি মামলা রয়েছে। রবিবার রাতে সরদারপাড়া নামক এলাকায় মাদক চালান হবে এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ সেখানে ওঁৎ পেতে থাকে। এসময় ৭/৮ জনের মাদক চোরাচালানীরা সেখান দিকে মাদক পাচার করার সময় পুলিশ বাধা দেয়। এসময় মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের ওপর হামলা চালালে আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি ছোড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই বাবু নিহত হয়।

এই ঘটনায় কনস্টেবল শহীদুল ইসলাম ও কনস্টেবল আরিফুল ইসলাম নামে ২ পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদেরকে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

তবে এলাকাবাসী জানায় অন্য কথা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক এলাকাবাসী জানান, বাবু একজন মাদক ব্যবসায়ী ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সে এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল না। সে বর্তমানে ধান-চালের ব্যবসা করতো।

নিহতের ছেলে আল-আমীন দিনাজপুর সরকারি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে মাস্টার্সের ছাত্র। তিনি বলেন, ‘আমার বাবাকে ধরতে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ২ ডিবি পুলিশ মিল-চাতালে আসে। কিন্তু বাবাকে না পেয়ে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল নিয়ে যায়। পরে রাত আনুমানিক ১০টার দিকে বিরল থানা পুলিশ এসে বাবাকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আর বাবার খোঁজ পাইনি। রবিবার সকালে জানতে পারি, বাবাকে হত্যা করা হয়েছে।’ তবে বাবাকে খুঁজে না পাওয়ায় থানায় কোনও জিডি করা হয়নি।

২নং ফরাক্কাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোসাদ্দেক হোসেন জানান, বাবু মাদক ব্যবসায়ী ছিল। তবে কিছুদিন ধরেই সে মিল চাতালে বেশি সময় দিত। গত শুক্রবার দিবাগত রাতে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল এমন বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে পরিবার থেকে তাকে কিছু বলা হয়নি।

বিরল থানার ওসি আব্দুল মজিদ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, শুক্রবার রাতে বাবুকে ধরে নিয়ে আসা হয়েছিল, অভিযোগটি সত্য নয়। রবিবার রাতেই বন্দুকযুদ্ধে সে মারা যায়।

তিনি আরও জানান, পুলিশের ওপর হামলার কারণেই সেখানে ১১ রাউন্ড গুলি চালানো হয়েছে।