নদীতে খাঁচায় মাছ চাষে সফল মৎস্য চাষিরা

খাঁচাতে মাছ চাষপঞ্চগড়ের তালমা নদীতে পরীক্ষামূলক ভাবে খাঁচায় মাছ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন মৎস্য চাষি। খাঁচায় মাছ চাষ লাভবান হওয়ায় অনেক বেকার যুবকই এখন এই পদ্ধতি অবলম্বনের আগ্রহ প্রকাশ করছেন। সরকারিভাবে বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করা গেলে মাছের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি বেকার সমস্যার সমাধান হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পঞ্চগড় জেলা মৎস্য অধিদফতরের সহযোগিতায় কমন বেনিফিসিয়ারি গ্রুপ (সিবিজি) পদ্ধতিতে তালমা রাবার ড্যাম এলাকার ২০ জন মৎস্যজীবী, মৎস্যচাষি ও সুবিধাভোগী তালমা নদীতে নেট ও প্লাস্টিকের ড্রাম দিয়ে খাঁচা (কৃত্রিম পুকুর) তৈরি করেন। এরপর প্রতিটি খাঁচায় ৪০ কেজি করে মনোসেক্স্র তেলাপিয়া মাছের পোনা ছাড়েন। দুই মাস তিনদিন পরে এক একটি পোনার/মাছের ওজন প্রায় ২০০ গ্রাম থেকে আড়াই’শ গ্রাম পর্যন্ত হয়েছে। এই পদ্ধতি এলাকাবাসীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

PANCHAGARH-FISH-PIC-02মৎস্যচাষি নাজির হোসেন, নাজিরুল ইসলাম, আশরাফুল আলম, ফারুক ও রবিউল জানান, ১০টি খাঁচা তৈরি করে পোনা (মাছ) ছাড়া পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ২ লাখ টাকা। দুই মাস তিনদিন পর্যন্ত মাছের খাওয়ার বাবদ খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা। বর্তমানে যে পরিমাণ মাছ উৎপাদন হয়েছে তাতে প্রায় চার হতে সাড়ে চার লাখ টাকা বিক্রি করা সম্ভব হবে। মাছ উত্তোলনের সময় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. আফতাব হোসেন, সিনিয়র সহকারী পরিচালক আশরাফুজ্জামান, সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সানী খান মজলিস ও জেলা ফিল্ড সুপার ভাইজার আব্দুর রাজ্জাকসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।       

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. আফতাব হোসেন বলেন, ‘উন্মুক্ত ও অনিয়ন্ত্রিত জলাশয়ে নদীতে খাঁচায় মাছ চাষ পঞ্চগড়ে এটাই প্রথম। অন্যান্য জেলায় এর চাহিদা থাকলেও আমাদের জেলার  মৎস্যচাষি ও মৎসজীবীরা তা বুঝতেন না। তালমা নদীতে প্রথম খাঁচায় মাছ চাষে সফলতা আসায়  জেলা মৎস্য অফিস সিবিজি পদ্ধতি চাষি ভাইদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। লাভজনক হওয়ায় এখন অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। এরই মধ্যে এই সিবিজি পদ্ধতি অবলম্বন করে দেশি শিং মাছ ও মাগুর মাছ উৎপাদন করতে আমরা সক্ষম হচ্ছি। আশা করি মৎস্যচাষি ভাইয়েরা লাভবান হবেন। বেকার যুবকেরাও যদি এই পদ্ধতিতে খাঁচায় মাছ চাষে এগিয়ে আসেন জেলা মৎস্য অফিস তাদের সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন।’