‘ঘাতকদের বিচার হলেই মায়ের আত্মা শান্তি পাবে’

রেজিয়া বেগমের বোন ও ছেলে‘আমরা পুরো পরিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি আমাদের জন্য অনেক করেছেন। আশরা আশা করছি, এ বছরই ঘাতকদের বিচার শেষ হবে। তাদের কঠোর শাস্তি হবে। তাহলেই মায়ের আত্মা শান্তি পাবে।’ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় গ্রেনেড হামলায় নিহত রেজিয়া বেগমের দুই ছেলে বাংলা ট্রিবিউনকে এসব কথা বলেন।

১৪ বছরেও বিচার শেষ না হওয়ায় দুই সন্তানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এখন তাদের একটাই দাবি- হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার করে তা কার্যকর করা হোক।

রেজিয়া বেগমের বাড়ি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায়।

বড় ছেলে হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘৩৯ বছর পরে হলেও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার হয়েছে। আমার বিশ্বাস— আমার মায়ের হত্যার বিচারও আমরা পাবো।’

ছোট ছেলে নুরন্নবী জানান, ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাদের পরিবারের জন্য ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। ২০১৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ৮ লাখ টাকা দেওয়া হয়। এখন তাদের কোনও অভাব নেই। ওই টাকা দিয়ে দুই ভাই ব্যবসা-বাণিজ্য করে পরিবার-পরিজন নিয়ে শান্তিতে বসবাস করছেন। তিনি বলেন, ‘এখন একটাই চাওয়া— মায়ের হত্যার বিচার হোক।’

রেজিয়ার বড় বোন আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘বাড়িত বসে শাড়ির আঁচল দিয়ে বারবার বোনের ছবি মুছি। আমরা এখন দ্রুত হত্যাকারীদের ফাঁসি কার্যকর দেখতে চাই।’

স্বজনরা জানান, কাউনিয়া উপজেলার গঙ্গানারায়ন গ্রামের আফাজ উদ্দিনের মেয়ে রেজিয়া বেগম ১৯৯০ সালে কাজের সন্ধানে ঢাকায় পাড়ি জমান। ঢাকার বাড্ডা এলাকায় ইন্ডিয়ান ভিসা অফিসে ছবি লাগানোর কাজ করতেন তিনি। ভাড়া থাকতেন একই এলাকায়। সেখানে মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী আয়শা মোকারমের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। রেজিয়া আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতেন। ২১ আগস্ট ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি মিছিলে যোগ দিতে সমাবেশ স্থলের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ নেত্রী আয়শা মেকারমের  নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়। সেই মিছিলে রেজিয়াও ছিলেন। তারা মিছিল করে সমাবেশে আসেন। অন্যান্য নেতাকর্মীদের সঙ্গে রেজিয়া বেগম তার প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রাকের কাছেই অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন। পরে গ্রেনেড হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন। পরের দিন তার ছোট ছেলে নুরনবী তার মায়ের লাশ শনাক্ত করেন। আজিমপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলী বলেন, ‘রেজিয়ার পরিবার যেন সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা পায়, সেই চেষ্টা করছি আমরা।’