বিনা মূল্যে বীজ, ঋণে সার ও নগদ অর্থসহ তামাক ক্রয়ের নিশ্চিতার লোভেই তামাক চাষে ঝুঁকে পড়েছে এ অঞ্চলের চাষীরা। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর জেনেও অধিক মুনাফা লাভের আশায় তামাকের জমিতে কাজ করছে শিশুরাও।
জেলার ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ, সৈয়দপুর ও নীলফামারী সদরে মাঠের পর মাঠ জুড়ে শুধুই তামাক। দিন যতই যাচ্ছে ততই বাড়ছে তামাক চাষ। কৃষি বিভাগ তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করলেও কোম্পানির লোভনীয় আশ্বাসে দিন দিন বেড়েই চলছে জেলায় তামাক চাষ।
তবে কৃষকরা বলছেন, চলতি বছর জেলায় দ্বিগুণ পরিমাণ ফসলি জমিতে চাষ হয়েছে বিষ বৃক্ষ তামাকের। কোম্পানিগুলো তামাক ক্রয়ের শতভাগ নিশ্চিয়তা প্রদান করেন। পাশাপাশি, কৃষকের উৎপাদিত পণ্য ক্রয়ের ব্যাপারে সরকারের নেই কোনও উদ্যোগ।
নীলফামারী সদরের রামনগর ইউনিয়নের বাহালী পাড়া গ্রামের রামবাবু রায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, তামাক চাষ স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর হলেও অধিক মুনাফা লাভের আশায় পৌষের শীতকে উপেক্ষা করে তামাকের ক্ষেতে কাজ করছেন কৃষকরা।
চড়চড়াবাড়ী গ্রামের তামাক চাষি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তামাক চাষের জন্য কোম্পানিগুলো অগ্রিম ঋণসহ সার ও নগদ টাকা দেয়। তামাক কেনার শতভাগ নিশ্চিয়তা থাকে। এছাড়া বাজারে তামাকের যথেষ্ঠ চাহিদা রয়েছে।’
তামাক চাষিরা জানা, পুরান তামাক এখন বাজারে ৩৫০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষক আসাদুল ইসলাম মন্টু বলেন, সরকার যদি বিনা শর্তে ঋণসহ ফসল ক্রয়ের নিশ্চিয়তা দেয় তাহলে তামাক চাষ ছেড়ে দিয়ে কৃষক ভুট্টা, গম, আলু ও সরিষা চাষে করবে।
কৃষকদের অভিযোগ, কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কৃষি তথ্যের খবর জানতে চাইলে তারা সেটি আমলে নেয় না। বীজতলাসহ সবজির ক্ষেত নষ্ট হলেও কৃষি অফিসের লোকজনের দেখাই মেলে না। তাই তারা গম ভুট্টা, আলু বা অন্য কোনও ফসল চাষ না করে তামাকই চাষ করছেন। তামাকের কোনও রোগ বালাই হয় না।
নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক গোলাম ইদ্রিস বলেন, তামাক চাষে কুষকদের নিরুৎসাহিত করতে কৃষিবিভাগ যথেষ্ঠ আন্তরিক হয়ে কাজ করছে। কিন্ত চাষিরা অধিক মুনাফার আশায় তামাক চাষে ঝুঁকে পড়ছেন।
তিনি বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার ৪৫৮ হেক্টর জমিতে তামাকের কম চাষ হয়েছে। আশা করি সরকারের পৃষ্টপোশকতায় আগামীতে কৃষক তামাক চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।