হিলিতে বাড়ছে সরিষার আবাদ

ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় দিনাজপুরের হিলিতে সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমন না থাকায় এবারে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা তাদের। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, হাকিমপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। চারিদিকে শুধু হলুদের সমারোহ। চলতি মৌসুমে উপজেলার  ৮৩০ হেক্টর জমিতে ফলছে বারী সরিষা ৯, বারী সরিষা ১৪, বারী সরিষা ১৫, বিনা সরিষা ৪, বিনা সরিষা ৯, টরি ৭ ও স্থানীয় মরু জাতের সরিষা।HILI SORASA PIC 2

হিলির ছাতনি ও জালালপুর গ্রামের কৃষক সামসুল ইসলাম, মিনহাজুল ও সুজন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘সাধারণত প্রতিবছর আমন ও ইরি এই দুই ফসলই আমরা কৃষকরা আবাদ করতাম। বাকি বেশিরভাগ সময় জমি পড়ে থাকত। এবারে সেই পতিত জমিতে আমরা কৃষকরা সরিষার আবাদ করছি। এতে করে সংশ্লিষ্ট কমই থেকে তিনবার ফসল আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে।’

তারা আরও বলেছেন, ‘সরিষা চাষে রোপণ থেকে শুরু করে পরবর্তীতে বাড়তি তেমন কোনও খরচ নেই। শুধুমাত্র জমিতে সার প্রয়োগ করতে হয়। এতে বাড়তি কোনও সেচ দিতে হয় না, যার ফলে সরিষা চাষে আমরা কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছি। অপর অনেক কৃষকও সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন।’

সরিষার গাছগুলো জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়, যার ফলে বাড়ির রান্না-বান্নার কাজে জ্বালানির চাহিদে মেটে। এছাড়া মাঠ থেকে সরিষা উঠানোর পরে সেই জমিতেই বোরো ধান রোপন করা হবে, এতে করে বোরো ধান চাষাবাদে সারের খরচও খানিকটা কম হয়। এবারের আবহাওয়া সরিষা চাষের অনুকূল থাকায়, সরিষাতে রোগ-বালাইয়ের তেমন আক্রমণ নেই। গত বছরে প্রতি বিঘা জমিতে ৬ থেকে ৭ মন করে সরিষার ফলন হলেও এবারে বাড়তি ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার শামীমা নাজনীন বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, ‘চলতি মৌসুমে হাকিমপুর (হিলি) উপজেলায় ৮৩০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। আমন ধান কাটার পরে সেই জমিতে সরিষার আবাদ করা যায়। পরবর্তীতে একই জমিতেই চাষ করা যায় বোরো ধানের। এতে করে কৃষকরা একটি বোনাস ফসল হিসেবে সরিষার আবাদ করছেন। সরিষা চাষে খরচ অত্যান্ত কম, আবার ফলন ভালো। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নানারকম পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি আমরা।’