হিলি সীমান্ত দিয়ে গরু আসা বন্ধ, লাভের আশা খামারিদের

মংলা বাজার বিট খাটালসীমান্তে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, বিজিবি ও বিএসএফের নজরদারির কারণে দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত দিয়ে গরু আসা বন্ধ রয়েছে। অবৈধ পথে গরু আসা বন্ধ থাকার পাশাপাশি বৈধ পথেও এবার আর ভারত থেকে গরু আসছে না। এদিকে সীমান্ত দিয়ে গরু আসা বন্ধ থাকায় ঈদুল আজহায় গরুর ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন স্থানীয় খামারিরা।

বিজিবির মংলা ক্যাম্প সূত্রে জানায়, সীমান্ত দিয়ে বৈধ পথে গরু আনার জন্য হিলি সীমান্তের মংলা এলাকায় বিট বা খাটাল রয়েছে। এ পথ দিয়ে বৈধ উপায়ে গরু আসার পাশাপাশি অবৈধভাবেও ভারত থেকে গরু আসতো। মাঝে-মধ্যে বিজিবির হাতে ধরাও পড়তো এসব গরু। গত বছরের ঈদুল আজহার আগ পর্যন্ত মংলা বিট বা খাটাল দিয়ে গরু আসা বন্ধ রয়েছে। তবে এ পথ দিয়ে ঈদের পর অবৈধভাবে গরু আসা চলমান ছিল, সম্প্রতি তা একেবারে বন্ধ রয়েছে।

এদিকে সীমান্ত দিয়ে গরু আসা বন্ধ থাকার কারণে স্থানীয় খামারিরা ঈদে পশুর হাটে ভালো দাম পাবেন বলে আশা করছেন।

সীমান্ত দিয়ে গরু আসা বন্ধ থাকায় পশুর হাটে ভলো দাম পাবার আশা করছেন খামারিরাহিলির নন্দিপুর গ্রামের খামারি নুর আলম ও চন্ডিপুর গ্রামের খামারি সব্যসাচী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ঈদুল আজহায় বাড়তি লাভের আশায় আমরা গরু লালন-পালন করে আসছি। বিগত কয়েক বছর ধরেই এ কাজ করছি। তবে ঈদের আগ মুহূর্তে ভারত থেকে গরু আসার ফলে আমরা কাঙ্ক্ষিত দাম পাই না। তবে এবার সরকার ঈদ পর্যন্ত গরু আমদানি বন্ধ ঘোষণা করেছে বলে জানতে পেরেছি। এছাড়াও হিলি সীমান্ত দিয়ে অবৈধপথে বা বিট বা খাটাল রয়েছে এই দুই পথ দিয়েই বর্তমানে গরু আসা বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে আমরা গরুর ভালো দাম পাবো বলে আশা করি।

তবে সীমান্ত পথে ভারতীয় গরু আসা বন্ধ থাকায় বিট বা খাটালের ইজারাদাররা পড়েছেন লোকসানের মুখে।

মংলা বিট বা খাটালের ইজারাদার হোসেন আলী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, হিলি সীমান্তের ভারত অংশে পুরো এলাকা জুড়ে বাতি দিয়েছে বিএসএফ, এছাড়াও সীমান্ত দিয়ে যেন গরু পারাপার হতে না পারে সেজন্য আগের চেয়ে নজরদারিও বাড়িয়েছে। এতে করে সীমান্ত দিয়ে আগের মতো গরু আসে না, যার জন্য লোকশানের কারণে এবারে বিট বা খাটালের ইজারা নবায়ন করিনি।

ঈদে পশুর হাটে খামারিরা ভালো দাম পাবেন বলে আশা করছেনবিজিবির মংলা বিওপি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার শাহজাহান আলী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, মংলাতে যে বিট বা খাটাল ছিল এবারে সেটির এখন পর্যন্ত কোনও অনুমোদন হয়নি, এটির কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এই পথে গরু আসাও বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও সীমান্ত দিয়ে যাতে কোনোভাবে অবৈধপথে গরু দেশে আসতে না পারে, এ বিষয়ে সীমান্তে বিজিবির পক্ষ থেকে নজরদাড়ি বাড়ানো হয়েছে।

হাকিমপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসার ডা. আব্দুস সামাদ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে হাকিমপুর উপজেলায় দুই হাজার ৪৪৭ জন ছোট-বড় খামারি রয়েছেন। এসব খামারে কুরবানির জন্য আট হাজার ৮০০ এর অধিক গরু, ছাগল লালন পালন করা হচ্ছে। আর আমাদের চাহিদা রয়েছে তিন হাজার ৭০০ পশুর, সে হিসেবে চাহিদার তুলনায় পাঁচ হাজার ১০০ গরু, ছাগল ও ভেড়া বাড়তি রয়েছে। এগুলো দেশের অন্য জেলার চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।