পারিবারিক কলহের জেরেই মেয়েকে নিয়ে ট্রেনের নিচে মায়ের ঝাঁপ




নীলফামারীপারিবারিক কলহের জেরেই মেয়ে বৃষ্টি আক্তারকে (৩) নিয়ে সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন মা টুলটুলি বেগম (২৩)। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে সদরের সোনারায় ইউনিয়নের দারোয়ানি রেল স্টেশনের কাছে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে তারা আত্মহত্যা করেন। টুলটুলি জেলা সদরের সোনারায় ইউনিয়নের ধনীপাড়া গ্রামের বাদাম বিক্রেতা তারেক হোসেনের স্ত্রী। সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ওসি এমদাদুল হক এসব তথ্য জানিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সকাল সাতটার দিকে খুলনা থেকে চিলাহাটিগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলে মা-মেয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

পারিবারিক সূত্র জানায়, জেলার সৈয়দপুরের কয়া গলাহাট পশ্চিমপাড়া গ্রামের বুধারু মামুদের মেয়ে টুলটুলির সঙ্গে ছয় বছর আগে বিয়ে হয় জেলা সদরের সোনারায় ইউনিয়নের ধনীপাড়া গ্রামের হামিদুল ইসলামের ছেলে তারেক হোসেনের। তারেক পেশায় বাদাম ও বুট বিক্রেতা।

টুলটুলি বেগমের বড় ভাই দুলাল হোসেন (৩০) অভিযোগ করেন, ‘তারেক প্রায় সময়ই মাদকাসক্ত হয়ে আমার বোনের ওপর নির্যাতন চালাতো। গত রবিবার রাতে তারেক আমার বোনকে না জানিয়ে তার এক জোড়া কানের দুল বিক্রি করে দিলে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এসময় তারেক আমার বোনকে বেধড়ক মারপিট করে। এ ঘটনায় ক্ষোভে ও অভিমানে ভাগনিকে সঙ্গে নিয়ে আমার বোন আত্মহত্যা করেছে।’

ঘটনার পর থেকে তারেকের হদিস মিলছে না। তবে তারেকের বাবা হামিদুল ইসলাম (৬৫) দাবি করেন, তার সন্তান মাদকাসক্ত নয়। তিনি বলেন, ‘ছেলে এবং বৌমার মধ্যে বাদানুবাদের ঘটনা ঘটেছে। সকালে বৌমা তার বাবার বাড়ি যাওয়ার কথা বলে নাতনিকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরে ট্রেনে কাটা পড়ে তাদের মৃত্যুর খবর পাই।’

সোনারায় ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ধারণা করছি পারিবারিক কলহের জেরে মেয়েকে নিয়ে টুলটুলি বেগম আত্মহত্যা করেছেন। ঝগড়ার জেরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একবার ছাড়াছাড়িও (তালাক) হয়েছিল। পরে সেটি মিটে গেলে দু’জনে সংসার করছিল।’

তারেক মাদকাশক্ত হতে পারে বলে জানান তিনি।

সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক ফিরোজুল ইসলাম বলেন, ‘আত্মহত্যার ঘটনায় একটি ইউডি মামলা দায়েরের পর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’

 

আরও পড়ুন:
তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে মায়ের ‘আত্মহত্যা’