রংপুর মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ তিন নেতা সাময়িক বরখাস্ত

রংপুররংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসিফসহ তিন নেতাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। বাকি দু’জন হলেন- যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ও সহ-সভাপতি বাপ্পি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল।

জানা গেছে, গত শনিবার (২৬ অক্টোবর) নগরীর বেতপট্টি এলাকায় অবস্থিত মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা ছিল। সেই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক, বিশেষ অতিথি ছিলেন রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হকসহ অন্যান্য নেতারা।

সভার জাহাঙ্গীর কবীর নানক ওয়ার্ড কমিটির নেতাদের কাছে দলের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান। এ সময় মহানগরীর আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা অভিযোগ করেন, দলে বেশ কয়েকজন জামায়াত-শিবির নেতা অনুপ্রবেশ করেছেন এদের মধ্যে কেউ কেউ বড় নেতা হয়েছেন। এ সময় নানক অনুপ্রবেশকারীদের নাম জানতে চাইলে অভিযোগ করা হয় রংপুর সিটি করপোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান ছাত্রশিবির করতো। তার শ্বশুর শাহ আকমল এখনও জামায়াতের রংপুর মহানগরীর একজন নেতা। এ কথা শোনার পর নানক সভায় আওয়ামী লীগ নেতা মিজানকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, জামায়াত, শিবির, বিএনপি এসব দলের নেতারা যারা আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করেছে তাদের খুঁজে বের করে দল থেকে বহিষ্কার করতে হবে। সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা প্রকৌশলী শাহাদতকে জামায়াত-শিবির বলে কয়েকজন চিহ্নিত করার চেষ্টা করলে প্রকৌশলী শাহাদত বিরোধীতা করেন। তিনি বলেন, আমি ছাত্রলীগ থেকে রাজনীতি শুরু করেছি, কোনোদিন জামায়াত-শিবির করিনি। এসব পাল্টাপাল্টি বাক-বিতণ্ডা চলতে থাকা অবস্থায় প্রকৌশলী শাহাদতের ছোট ভাই আসিফের নেতৃত্বে মহানগর ছাত্র লীগের কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সভাস্থলে প্রবেশ করে হট্টগোল শুরু করে। যার কারণে সভায় চরম বিশৃঙ্খলা দেখা হয়। একপর্যায়ে দু পক্ষের মধ্যে কয়েকদফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও হাতাহাতি চলতে থাকে। ফলে সভার কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

এ সময় জাহাঙ্গীর কবীর নানক ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আওয়ামী লীগের সভায় যারা গোলমাল করছে তারা ছাত্রলীগ হলে এমন ছাত্রলীগের কোনও প্রয়োজন নেই।

তিনি বলেন, যারাই গোলমাল করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরে নানক ও রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিরক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। কিন্তু সভা শেষ করে নেতারা চলে যাওয়ার পর রাত ৮টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের মহানগর নেতাদের সঙ্গে মহানগর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় মারামারি হয়। এতে কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।

মহানগর আওয়ামী লীগের এক শীর্ষনেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ওই ঘটনায় আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক রাতেই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে দায়ী ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেন। এরই প্রেক্ষিতে রবিবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ওই নেতাকে ছাত্রলীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কারের নির্দেশ দেন।

এদিকে বরখাস্ত হওয়া তিন ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদের সবার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল জানান, তিন ছাত্রলীগ নেতাকে সাসপেন্ড করার বিষয়টি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তাকে জানানো হয়েছে।