বস্তিবাসীর বিক্ষোভের পর সিরিয়াস হলেন রংপুরের মেয়র

খাদ্য সামগ্রীর জন্য বস্তিবাসীর বিক্ষোভকরোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া রংপুর নগরীর লালবাগ রেলওয়ে বস্তির কর্মহীন শত শত মানুষ খাদ্য সামগ্রীর দাবিতে শুক্রবার (৩ এপ্রিল) বিক্ষোভ করেছেন। তাদের অভিযোগ, এখন পর্যন্ত তারা সরকারের দেওয়া কোনও খাদ্য সামগ্রী পায়নি। খাবারের অভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সিটি মেয়র ও জেলা প্রশাসনকে বলে তাদের খাদ্য সরবরাহ করার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর রশিদ এ তথ্য জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জানান, সরকার সিটি করপোরেশনের দুঃস্থদের জন্য ১৬৫ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দিয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছিল আগেই। প্রতি ওয়ার্ডের ৫০০ জনের জন্য ১০ কেজি করে চাল, ডালসহ অন্যান্য উপকরণ দেওয়া হয়েছে।

খাদ্য সামগ্রীর জন্য বস্তিবাসীর বিক্ষোভ

তিনি বলেন,  ‘বস্তিবাসী খাদ্য সামগ্রী না পাওয়ার বিষয়টি আমি সিরিয়াসলি নিয়েছি। প্রয়োজনে নিজস্ব তহবিল থেকে তাদের জন্য খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।’

বস্তিবাসীরা  জানান, ১১ দিনের ধরে তারা বাসা থেকে বের হতে পারছে না। ফলে তারা কর্মহীন হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। কেউ তাদের কোনও খোঁজ খবর নেয়নি।

রাহেলা নামে একজন বলেন, ‘আমরা দিন এনে দিন খাই। ১১ দিন ধরে কাজ নাই। আমরা কীভাবে চলছি তা সরকার কি দেখে না?’

বস্তিবাসীকে শান্ত থাকতে পুলিশের মাইকিং

একই কথা বললেন বস্তির মমতাজ মিয়া, আছিয়া বেগমসহ অন্যান্যরা। তাদের অভিযোগ, সরকার সিটি করপোরেশনকে আমাদের মতো সহায় সম্বলহীনদের দেওয়ার জন্য চাল, ডালসহ নগদ অর্থ দিয়েছে। কিন্তু সিটি করপোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবলা লালবাগ বস্তির প্রায় এক হাজার পরিবারের একজনকেও কোনও খাবার দেয়নি। তাদের নাম তালিকাভুক্তও করেনি। তার বাসায় অনেকবার গিয়ে আকুতি মিনতি করলেও তিনি একবারের জন্য তাদের কাছে আসেনি। এমনকি সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বা আওয়ামী লীগের কোনও নেতা এমনকি কোন সেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান তাদের খোঁজও নেয়নি। ক্ষুধার জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে তারা বিক্ষোভ করছেন।

এদিকে পুলিশ স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে বাসা থেকে ডেকে লালবাগ বস্তিতে নিয়ে আসলে তিনি জানান, ৮/১০ বার তিনি এসেছিলেন বস্তিতে। এরপর বস্তিবাসী মিথ্যাবাদী বলে গালাগাল দেওয়া শুরু করলে তিনি আর কিছু বলেননি। পরে পুলিশের সহায়তায় বস্তিতে গিয়ে তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেন।

এসময় ওসি আব্দুর রশিদ মাইকে সবাইকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, শুক্রবারের মধ্যে তালিকা তৈরি করে খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।