নীলফামারী সদরের রামনগর ইউনিয়নের বাহালী পাড়া সরকার পাড়া গ্রামের আশরাফ আলী (৩৫) বলেন, পানির দামে বিক্রি হচ্ছে পশুর চামড়া। চামড়া যেন গত দুই বছর ধরে কোরবানি দাতার গলার কাটা। এতিম ও অসহায়রা বঞ্চিত হয়েছে চামড়ার ফেতরা থেকে।
শহরের পাইকার ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন বলেন, এতিম অসহায়রাও বঞ্চিত হয়েছে কোরবানির ফেতরা থেকে। আবার মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ওই টাকা থেকে বই, খাতা, কলম কেনে। এতে তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
জেলা শহরের বাড়াইপাড়া মহল্লার চামড়া ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম জানান, এবার ২৫০ পিস গরুর চামড়া কিনেছি। গড়ে প্রতি পিস ৩৫০ টাকা পড়েছে। লবণ চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। সেখানেও সমস্যা রয়েছে। ত্রিমুখী সমস্যার মুখে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।
নিউবাবু পাড়ার বিপ্লব মিয়া বলেন, ‘১২ হাজার টাকার খাসি কোরবানি করে চামড়া বিক্রি হলো ১৫ টাকা। শুনেছি সরকারি দাম খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৩-১৫ টাকা। সেই অনুপাতে চামড়া দাম হয় ২৫০ টাকা। কে দিবে এই টাকা ? চামড়া শিল্প এখন ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে।’
চামড়া ব্যবসায়ী সোলেমান মিয়া বলেন, ‘এই শহরে ছোট বড় প্রায় ২০ জন ব্যবসায়ী গত বছরের পাওনা টাকা তুলতে না পেরে অর্থাভাবে পড়েছেন। অর্থ সংগ্রহ করতে না পেরে তাদের পক্ষে চামড়া ক্রয় করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এবার নীলফামারীর চামড়ার বাজারে ধস নেমেছে।’
নীলফামারী চেম্বার অব কমার্চের সিনিয়র সহসভাপতি ফরহানুল হক জানান, মৌসুমি ব্যবসায়ীসহ চামড়া তিনবার হাতবদল হয়। এরপর আড়ৎদার কিংবা ট্যানারির মালিকরা তেমন একটা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। কিন্তু গ্রামের পাড়া মহল্লা ঘুরে চামড়া কিনে লোকসানে পড়ে মৌসুমি ও পাইকাররা। ট্যানারির মালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছেন তারা। সরকার নির্ধারিত বর্গফুট অনুযায়ী চামড়ার মূল্য পরিশোধের জন্য ট্যানারি মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।