হিলির আলিহাট ইউনিয়নের কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামে তুলশিগঙ্গা নদীর ওপরে ছাত্ররা এই কাঠের সেতুটি নির্মাণ করেন। আলিহাট ইউনিয়নের শেষ প্রান্তের গ্রাম কাশিয়াডাঙ্গা। পাশেই রয়েছে একই ইউনিয়নের বাশমুড়ি গ্রাম। দুই গ্রামের মাঝে সংযোগস্থলে রয়েছে তুলশিগঙ্গা নদী। যেখানে দীর্ঘদিনেও ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় দুই গ্রামের ৩০ হাজার মানুষকে পানি-কাদা ভেঙে কিংবা অনেক দূর দিয়ে ঘুরে বিপরীত সড়ক ব্যবহার করে চলাচল করতে হতো। এটা ছিল তাদের জন্য চরম দুর্ভোগের।
কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি আব্দুল করিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, দাদার আমল থেকে শুনে আসছি এখানে বিজ্র হবে। ব্রিজ হতে হতে ৭০-৮০ থেকে দাদারা বিদায় নিয়ে চলে গেলো। এরপর আমার বাবা-চাচারা আসলো, তারাও বললো ব্রিজ হবে। এই এমপি গিয়ে ওই এমপি আসছে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। আমরা এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে কষ্ট ভোগ করছি। ব্রিটিশ আমলে কাঠের সেতু হলেও সেটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মানুষের কষ্ট আরও বেড়ে যায়।
ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোক্তা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাসির উদ্দিন, নাসির উল্লাহ ও চীনে অধ্যয়নরত আনাছ আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, করোনার কারণে প্রায় ৬ মাসে ধরে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। ফলে এই গ্রামের ছেলেরা যারা বাইরে পড়ালেখা করতাম সবাই ছুটি পেয়ে বাড়িতে বসে ছিলাম। আমরা দীর্ঘদিন ধরে শুনে আসছিলাম গ্রামের তুলশিগঙ্গা নদীর ওপরে ব্রিজ নির্মাণ হবে, হচ্ছে। কিন্তু তারপরও হয় না। এ অবস্থায় এলাকাবাসীর উপকারের কথা চিন্তা করে আমরা এখানে ব্রিজটি নির্মাণের উদ্যোগ নিই। বিত্তবান থেকে শুরু করে গ্রামের সবাই আমাদের অর্থ দিয়ে, বুদ্ধি দিয়ে, গাছ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। ব্রিজটি নির্মাণ করতে ২৫০টির মতো গাছের গুঁড়ি লেগেছে। এর সঙ্গে কাঠ দিয়ে দীর্ঘ ৪৫ দিন ধরে কাজ করে ব্রিজটি নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছি। তবে এই ব্রিজটি যেহেতু ক্ষণস্থায়ী তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি এখানে যেন একটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ করা হয়।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি এমপি মহোদয় আমাদের কথা দিয়েছেন, অচিরেই এলজিইডির মাধ্যমে সেখানে একটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।