জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত সাত উপজেলা ও চার পৌরসভায় ৪১ হাজার ১০০ কম্বল এবং নগদ ৪২ লাখ টাকা কম্বল ক্রয়ের জন্য বিতরণ করা হয়েছে। তবে এসব কম্বল চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল্য বলে অভিযোগ দরিদ্র-অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের।
ঘন কুয়াশার কারণে গাইবান্ধার তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীতে নৌ চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলে মূল ভূমির সঙ্গে চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। দিনে কোনোরকম লাইট জ্বালিয়ে নৌ চলাচল করলেও সন্ধ্যার পর থেকে ঘন কুয়াশার কারণে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরাঞ্চলের মানুষ যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম বিপাকে পড়ছে।
শীতের তীব্রতার সঙ্গে প্রতিদিনই বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে সর্দি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া এবং নিমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন শিশুসহ বৃদ্ধরা। আক্রান্তরা চিকিৎসা নিতে ভিড় করছেন জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। তবে কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে রোগীদের।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন বলেন, ‘জেলার শীতার্তদের জন্য শীতবস্ত্র চেয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে বরাদ্দ পাওয়া কম্বল জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে শীতার্তদের তালিকা প্রস্তুত করে বিতরণ করা হচ্ছে। শীতার্ত মানুষের জন্য সরকারের বরাদ্দের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠনসহ ব্যক্তি উদ্যোগে তাদের পাশে দাঁড়ানো দরকার। তাহলে দরিদ্র মানুষদের শীতের দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। তবে জেলার সাত উপজেলার মধ্যে চার উপজেলার চরাঞ্চলসহ প্রত্যন্ত এলাকায় দুস্থ ও অসহায় মানুষদের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দিতে তিনিসহ সংশ্লিষ্ট ইউএনওরা দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন।'
তিনি আরও জানান, শীতবস্ত্র বিতরণের পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ রোধে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে জেলা ও উপজেলার সব হাসপাতাল ও ক্লিনিকসহ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা একেএম ইদ্রিস আলী বলেন, ‘গাইবান্ধার সাত উপজেলার ৮১টি ইউনিয়ন ও চারটি পৌরসভার দরিদ্র-অসহায় ও নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে ৩৯ হাজার ১০০ পিস কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এতে প্রত্যেকটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ৪৬০টি করে কম্বল বরাদ্দ হয়েছে। এছাড়া শীতবস্ত্র ক্রয়ে নগদ ৪২ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে শীতবস্ত্র ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ পাওয়া নগদ ৪২ লাখ টাকা সাত উপজেলায় ৬ লাখ করে বণ্টন করা হয়েছে।' জেলার চাহিদা অনুযায়ী আরও ৫০ হাজার কম্বল বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।