পচা পেঁয়াজ কিনতে বাধ্য করছেন রংপুরের টিসিবি ডিলাররা!

রংপুরে টিসিবি ডিলারদের মাধ্যমে বিদেশ থেকে আমদানি করা পচা পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতাদের বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে ডিলাররা পচা পেঁয়াজ না কিনলে ক্রেতাদের কাছে সয়াবিন তেল, চিনি ও ডাল বিক্রি করছেন না।

টিসিবি সূত্রে জানা গেছে তেল, চিনি ও মসুর ডালের দাম বাজারে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় নগরীর ছয়টি স্থানে ট্রাকে করে এসব পণ্য সামগ্রী মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) থেকে বিক্রি শুরু হলেও ক্রেতারা টিসিবির ডিলারদের দেওয়া শর্তের কারণে পণ্য কিনতে পারছেন না।

সরেজমিন রংপুর নগরীর প্রেসক্লাব এলাকা ও কাছারি বাজারে গিয়ে ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি করতে দেখা গেছে। এসময় অপেক্ষামান ক্রেতারা নানা অভিযোগ তুলে ধরেন।

নগরীর মুন্সিপাড়া মহল্লার সালাম মিয়া বলেন, বিদেশি যে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে তার বেশিরভাগই পচা। তারপরেও বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তেল ও চিনি কিনতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে।

অটোচালক নবিউর রহমান বলেন, আমরা যারা স্বল্প আয়ের মানুষ, তারা টিসিবির ডিলারদের দেওয়া শর্ত পূরন করতে না পারায় পণ্য কিনতে পারছি না।

গৃহবধূ হাসিনা বেগম অভিযোগ করেন সাত কেজি পেঁয়াজ কিনলেই কেবল দুই লিটার ভোজ্য তেল বিক্রি করবে বলে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ডিলারদের বিক্রি করা পেঁয়াজের মান খারাপ এবং বেশিরভাগই পচা। প্রতিকেজি ২০ টাকা দরে সাত কেজি পেঁয়াজের ১৪০ টাকা আর ভোজ্য তেল ৮০ টাকা লিটার হিসাবে ১৬০ টাকা মোট ৩০০ টাকা দিলেই পণ্য মিলছে।

একই কথা জানান নগরীর গুপ্তপাড়া মহল্লার আশরাফ কাদের। তিনি অভিযোগ করেন, পাঁচ কেজি পেঁয়াজ কিনলেই কেবল সঙ্গে দুই কেজি ডাল বা দুই কেজি চিনি কেনা যাচ্ছে। তবে এভাবে জিম্মি করে পণ্য বিক্রি অমানবিক।

তিনি বলেন, আগে যখন পেঁয়াজের কেজি ২০০ টাকা হয়েছিল, তখন তারা দুই কেজির বেশি পেঁয়াজ বিক্রি করবেন না বলে শর্ত জুড়ে দিয়েছিলেন। আর এখন পচা পেঁয়াজ গছিয়ে দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে টিসিবির ডিলার শরিফুল জানান, তাদের বাধ্যতামূলকভাবে এক হাজার কেজি পেঁয়াজ নিতে বাধ্য করছে টিসিবি। একইভাবে ১০০ কেজি ডাল ও ১০০ কেজি চিনি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু পেঁয়াজ নিম্নমানের হওয়ায় ক্রেতারা নিতে চাইছে না। তাই শর্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে টিসিবির রংপুর ডিপো ইনচার্জ প্রতাপ কুমার রায়ের সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হয়। এসময় তিনি বলেন, গোডাউনে প্রচুর পেঁয়াজ পড়ে আছে। সে কারণে আমরা শর্ত জুড়ে পণ্য বিক্রি করছি। ক্রেতাদের জিম্মি করে পেঁয়াজ কিনতে বাধ্য করার কোনও নির্দেশনা আছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি কোনও সদুত্তোর দিতে পারেননি।