আজ হিলি ট্রেন দুর্ঘটনা দিবস

আজ ১৩ই জানুয়ারি, দিনাজপুরের হিলি রেল স্টেশনে আজকের দিনটি অনানুষ্ঠানিকভাবে পালিত হচ্ছে ট্রেন দুর্ঘটনা দিবস হিসেবে। ২৬ বছর আগে ১৯৯৬ সালের এই দিনে এই রেলওয়ে স্টেশনে ঘটেছিল দেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ এক ট্রেন দুর্ঘটনা। দুটি ট্রেনের সংঘর্ষে সেদিন বহু মানুষ নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। সেই দিনের ট্রেন দুর্ঘটনার কথা মনে হলে আজও গা শিউরে উঠে হিলিবাসীর।

হিলি রেলওয়ে একতা ক্লাবের তৎকালীন সময়ের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বুলুসহ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ও হিলি রেলওয়ে স্টেশন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৫ সালের ১৩ই জানুয়ারি শুক্রবার রাত সোয়া ৯টায় ক্রসিংয়ের উদ্দেশ্যে হিলি রেলওয়ে স্টেশনের ১নম্বর লাইনে দাঁড়িয়েছিল গোয়ালন্দ থেকে ছেড়ে আসা পার্বতীপুরগামী ৫১১নং লোকাল ট্রেনটি। কিন্তু সেই সময়ে স্টেশনে দায়িত্বরত মাস্টার ও পয়েন্টসম্যানের কর্তব্যে অবহেলায় দেওয়া ভুল সংকেতের কারণে সেই ১ নম্বর লাইনেই ঢুকে পড়ে সৈয়দপুর থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী ৭৪৮নং আন্তঃনগর সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনটি। এতে করে মুহুর্তের মধ্যেই দু’টি ট্রেনের মুখোমুখি সংষর্ষের ঘটনা ঘটে, পুরোপুরি দুমড়ে মুচড়ে যায় লোকাল ট্রেনটির ইঞ্জিনসহ ৩টি বগি। পরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন, স্থানীয় রেলওয়ে একতা ক্লাবের সদস্যসহ স্থানীয়রা দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের উদ্ধার করেন। ওই মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় শতাধিক লোক মারা যায়, যদিও সরকারিভাবে মাত্র ২৭ জন নিহতের ঘোষণা দেওয়া হয়। সেই ট্রেন দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণ করেন অনেকে। দুর্ঘটনার পরের দিন ১৪ জানুয়ারি শনিবার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া হিলিতে এসে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণের ঘোষনা দিয়েছিলেন। গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। সেই তদন্তে দায়িত্বরত স্টেশন মাস্টার ও পয়েন্টসম্যানের কর্তব্যে অবহেলার বিষয়টিই উঠে এসেছিল।

দিনটিকে স্মরণ করে প্রতিবছরের মতো এবারও হিলি রেলওয়ে একতা ক্লাবের উদ্যোগে দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে দোয়া খায়ের, মিলাদ মাহফিল, কালো ব্যাজ ধারণ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।