গাইবান্ধায় ৪ পুলিশ হত্যার ৮ বছর, শেষ হয়নি বিচার কাজ

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গায় চার পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে হত্যার আট বছর পূর্ণ হয়েছে। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা দেলওয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর জামায়াত-শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা অগ্নিকাণ্ড-লুটপাট আর নারকীয় তাণ্ডব চালায় সুন্দরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায়। এসময় বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ঢুকে পুলিশ সদস্য তোজাম্মেল হক, নজিম উদ্দিন, বাবলু মিয়া ও হযরত আলীকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। শুধু তাই নয়, ঘটনার প্রতিবাদ করায় গংশারহাটে এক আওয়ামী লীগ সমর্থকের জিহ্বা কেটে ও চোখ উপড়ে ফেলে হত্যা করা হয়।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, চাঞ্চল্যকর এ হত্যার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৮৯ জনের নামীয় ও অজ্ঞাত আরও পাঁচ থেকে ছয় হাজার জনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ২০১৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই মামলার প্রধান আসামি সাবেক এমপি জামায়াত নেতা আবদুল আজিজ ওরফে ঘোড়ামারা আজিজসহ অধিকাংশ আসামিরা পলাতক। আবদুল আজিজ মানবতাবিরোধী অপরাধেও ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এছাড়া এ মামলায় পুলিশ দুই শতাধিক আসামিকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠালেও বর্তমানে তারা সবাই জামিনে আছেন।

আলেচিত এই মামলার আট বছরেও বিচার কাজ শেষ না হওয়ায় হতাশ ও ক্ষুদ্ধ স্থানীয় এবং নিহতদের স্বজনরা। দ্রুত মামলার বিচার শেষ করে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তারা।

তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলছেন, আদালতে এ মামলায় মোট ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে বিচারক না থাকায় গত এক বছর ধরে এ মামলার অগ্রগতি হয়নি। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আবারও মামলাটি জজ আদালতের হস্তান্তরের মধ্যে দিয়ে দ্রুতই বিচার কাজ শেষ করা হবে।

এদিকে প্রতিবছর স্থানীয়রা দিনটিকে সুন্দরগঞ্জ ট্র্যাজেটি দিবস হিসেবে স্মরণ করে আসছেন। দিবসটি পালনে স্থানীয়দের পাশাপাশি জেলা পুলিশের উদ্যোগে নিহতদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ শোকসভার আয়োজন করা হয়েছে।