গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের হামিন্দপুর, জামুডাঙ্গা ও মোল্লাপাড়াসহ ৮টি এলাকায় নির্বিচারে ফসলি জমিসহ খাস জমির মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাতের আঁধারে স্থানীয় মাটি-বালু ব্যবসায়ী সংঘবদ্ধ চক্র কৃষকদের নামমাত্র মূল্য দিয়ে আবার অনেকের জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কেটে রমরমা ব্যবসা চালাচ্ছেন।
এছাড়া চক্রটির বিরুদ্ধে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভেঙে যাওয়া স্থানের মাটি এবং নীলকান্তের ছড়ার (সরকারি খাস) জমির মাটিও গভীর করে কেটে নেওয়ার অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। এমনকি পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি বসানো জমি থেকেও ৫-৬ ফুট গর্ত করে চক্রটি মাটি লুট করায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। মাটি কেটে পাচারের এলাকার অনেক কৃষি জমি নষ্ট ও পুকুরে পরিণত হওয়াসহ আশপাশের জমি পড়েছে ভাঙনের মুখে।
শুধু জামুডাঙ্গা ও মোল্লাপাড়া নয়, সংঘবদ্ধ চক্রটি হামিন্দপুর, মণ্ডলপাড়ার চর, বাঁধের মাথা, ব্রিজের পশ্চিম পাশ ও পাটনিপাড়ায় স্পট করে ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই মাটি বিক্রির মহাযজ্ঞে মেতেছেন বালুখেকো ফুল মিয়া, তার ছেলে জুয়েল ও স্থানীয় শফি, চিনু, কামরুল এবং বাবলুসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র। তারা প্রতিরাতে লাখ লাখ টাকার মাটি কেটে ৩০ থেকে ৪০টি ট্রাক্টর ও মহেন্দ্র দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছেন। প্রকাশ্যে মাটি কেটে বিক্রির হিড়িক চললেও রহস্যজনক কারণে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ ও প্রশাসনের নীরবতায় ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে।
বাঁধের মাথা এলাকার খলিল মিয়া, চাঁন মিয়া ও আল-আমিনসহ স্থানীয়রা জানান, চিহ্নিত বালু খেকো ও ভূমিদস্যুরা অবাধে কৃষি জমি ছাড়াও নদীর চর ও সরকারি খাস নীলকান্তের ছড়ার মাটি কেটে বিক্রি করছেন। তারা রাতের আঁধারে ২০০-৩০০ ট্রাক্টর-মহেন্দ্র দিয়ে উপজেলা ছাড়াও জেলা শহরে লাখ লাখ টাকার মাটি বিক্রি করছে। এতে এলাকার অনেক জমি বড় গর্তসহ পুকুরে পরিণত হয়েছে। এছাড়া মাটি বহনে বেপরোয়া গতিতে বাঁধের ওপর দিয়ে যাতায়াত করছে এসব ট্রাক্টর ও মহেন্দ্র। ভোররাত পর্যন্ত বিকট শব্দে এসব ট্রাক্টর চলাচলে নির্ঘুম রাত কাটছে মানুষের।
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদ রানা জানান, মাটি ও বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ-প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বাঁধের মাথাসহ যেসব জায়গায় ফসলি জমির মাটি কেটে পাচার হচ্ছে সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে তা বন্ধে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনার পরও রাতে অবৈধভাবে ট্রাক্টর-ট্রলি দিয়ে মাটি বহন করায় তা আটক করা হয়। সেইসঙ্গে নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।