ঝড়-শিলায় ধান ও সবজির ব্যাপক ক্ষতি

কালবৈশাখি ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে হিলিতে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিলাবৃষ্টির কারণে অধিকাংশ জমির পাকা ধান শীষ থেকে ঝড়ে পড়েছে, একইভাবে ভুট্টা, তিলসহ বিভিন্ন শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ধান কাটার আগ মুহূর্তে এমন ক্ষতিতে কৃষকদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। স্থানীয় কৃষিবিভাগ বলছে শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে চারশ' হেক্টর জমির ধানসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সোমবার (১০ মে) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে হিলির মনসাপুর, জাঙ্গই, গড়িয়াল এলাকার উপর দিয়ে ঝড় ও শিলাবৃষ্টি বয়ে যায়। তবে অন্যান্য অঞ্চলের ওপর দিয়ে শুধু বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস বয়ে যাওয়ার খবর মিলেছে।

হিলির খাট্টাউছনা গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এবার ১২ বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগিয়েছিলাম। মাঠের ধান প্রায় পেকে গিয়েছিলো, দুই-একদিনের মধ্যেই ধান কাটতাম। কিন্তু রাতেে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে আমার সমস্ত জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। জমিতে গাছ ঠিকই দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু কোন শীষেই ধান নেই। এক কেজি ধানও এসব জমি থেকে পাওয়া যাবে না বলে আক্ষেপ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ধার দেনা করে ধান আবাদ করেছিলাম, ফলনও ভালো হয়েছিলো। তবে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে সব নষ্ট হয়ে গেলো। এতে আমার প্রায় দু থেকে আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি কীভাবে কাটিয়ে উঠবো, তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় পড়েছি। আমাদের গ্রামের অধিকাংশ মানুষের আমার মতোই অবস্থা।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ড. মমতাজ সুলতানা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, উপজেলায় ইতোমধ্যে ৮৫ ভাগ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। কিন্তু গত রাতে হিলির দুই-একটি অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে অবশিষ্ট ১৫ ভাগের মধ্যে সাড়ে চারশ' হেক্টর জমির ধানসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এতে করে আমাদের যে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, তার উপর প্রভাব পড়বে। এছাড়া ভুট্টার গাছগুলো হেলে পড়েছে সেগুলো কর্তনে বাড়তি ব্যায় হবে, পাশাপাশি ফলনেও প্রভাব পড়বে। এছাড়া শিলাবৃষ্টিতে তিলের গাছ ভেঙে গেছে, কচু গাছও ভেঙে পড়েছে। সবমিলিয়ে এসব এলাকার সবজির বেশ ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।