যে কারণে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম

আবারও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের বাজার। দিনাজপুরের হিলিতে আমদানিকৃত ও দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে সাত থেকে ১৩ টাকা। তিন দিন আগেও ভারতীয় পেঁয়াজ খুচরা বাজারে ৩৮ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছিলো। এখন ৪৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজের কেজি ৪২ টাকা বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে ৫২-৫৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ। দাম নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং ও টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রির দাবি জানিয়েছেন তারা।
 
হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা আশরাফুল ইসলাম ও মেহেদি হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, এক সপ্তাহ আগে ভারতীয় পেঁয়াজ ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে কিনেছি। এখন কিনতে হচ্ছে ৪৫ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ ৪০-৪২ টাকায় কিনেছি; এখন ৫৫ টাকা। এতো দাম দিয়ে পেঁয়াজ কেনার সামর্থ্য নেই আমাদের।

তারা জানান, করোনার বিধিনিষেধের কারণে কাজকর্ম নেই। বাজারে সব কিছুর দাম বাড়তি। এখন বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা বিপাকে পড়েছি। আগে যেখানে এক কেজি পেঁয়াজ কিনতাম; এখন সেখানে এক পোয়া কিনতে হচ্ছে। দাম কমলে আমাদের উপকার হতো।

স্থানীয় ক্রেতারা জানিয়েছেন, বাজারে নিয়ন্ত্রণ নেই স্থানীয় প্রশাসনের। ফলে ইচ্ছামতো দাম বাড়াচ্ছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। পেঁয়াজের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে বাজার মনিটরিং জরুরি। একইসঙ্গে টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রির দাবি জানিয়েছেন তারা।   
 
হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা খুচরা ব্যবসায়ী শেরেগুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, দুদিন আগে ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ কিনেছিলাম। আজ বাজারে এসে দেখি, ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি ৪৫ টাকা। দেশি পেঁয়াজের কেজি ৫২-৫৫ টাকা। এতো দাম দিয়ে পেঁয়াজ কিনে কীভাবে খুচরা বাজারে বিক্রি করবো; তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ

হিলি বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী ফিরোজ হোসেন ও মনিরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, আইপি (ইমপোর্ট পারমিট) শেষ হয়ে যাওয়ায় এক মাসের বেশি সময় ধরে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। একদিকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ অন্যদিকে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কম। মূলত এজন্য বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।

তারা জানান, কয়েকদিন আগে যে পেঁয়াজের মণ এক হাজার ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা কিনেছিলাম তা এখন এক হাজার ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় কিনতে হয়। মোকামে দাম বাড়ার কারণে বাড়তি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে আমাদের। এজন্যই বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না। বলা চলে পেঁয়াজের সংকট রয়েছে।

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, শুনেছি পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। অহেতুক কেউ যাতে পেঁয়াজের দাম বাড়াতে না পারেন সেজন্য বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। একই সঙ্গে অভিযোগ পেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হবে।