প্রায় দেড় বছর হলো ক্যাম্পাস বন্ধ। অনেক শিক্ষার্থী ভুগছেন হতাশায়। কেউ পড়েছেন আর্থিক টানাটানিতে। বিপরীতে কিছু শিক্ষার্থী চেষ্টা করছেন অবসরটাকে কাজে লাগিয়ে যদি কিছু টাকা কামানো যায়। আর এ কাজে অনলাইন প্লাটফর্মে আপাতত মৌসুমী ফল বিক্রিই তাদের উদ্যোক্তা হওয়ার পথ দেখাচ্ছে।
উত্তরবঙ্গের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) এমন তিনজন তরুণ উদ্যোক্তার সঙ্গে কথা হয়েছে বাংলা ট্রিবিউন-এর। তারা শোনালেন তাদের মৌসুমী উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প।
প্রথমে বন্ধুদের আমের ব্যবসার কথা বললে তারা অনীহা প্রকাশ করে। আমি অনলাইনে পোস্ট করলাম। অবিশ্বাস্যরকম সাড়া পেলাম তাতে। দেরি না করে 'খাঁটি আম ' নামে একটি পেইজ খুলে ফেলি। তাদের হাড়িভাঙ্গার আপডেট দেওয়া শুরু করলাম। যথারীতি অর্ডার আসা শুরু হলো। ক্রেতারা কীটনাশকমুক্ত আম পেয়ে খুশি। তাদের নির্ভেজাল আম দিতে পেরে আমিও আনন্দিত।
এবার পুরনো ক্রেতারাই আম পাকার আগেই খোঁজ নিতে শুরু করেছেন কবে নাগাদ আম নামবে। এটা বেশ ভালো লাগার মতো। আশা করছি এবার গতবছরের তুলনায় আরও ক্রেতা পাবো। তাদের আস্থা অর্জনের পাশাপাশি নিজের ব্যবসাটাও বড় আকারে নিয়ে যেতে চাই।
১৭তম ব্যাচের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী মিরাজুল আল মিশকাত বলেন, এ মহামারিতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। নিজেদের বাগান থাকায় খুব সহজে পাইকারি দামে উন্নতমানের আম সরবরাহ করতে পারি। লালমাটিতে রোপণ করা গাছে হাড়িভাঙ্গা আমের প্রকৃত স্বাদ পাওয়া যায়। প্রতিবছর প্রায় ছয় হাজারের বেশি মণ আম আমাদের পারিবারিক বাগান থেকে উৎপাদিত হয়। ব্যক্তিগতভাবে কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগও করতে পেরেছি।
১৮তম ব্যাচের ইংরেজির শিক্ষার্থী নাসির হোসাইন বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ মাস বাড়িতে বসে অলস সময় পার করছিলাম। হাতে কোনও কাজ ছিল না। সারাদিন অনলাইনে সময় নষ্ট হতো। হঠাৎ একদিন দেখলাম আমারই এক বন্ধু ফেসবুকে আম-লিচু বিক্রির পোস্ট দিয়েছে। রাতে ঘুমানোর সময় চিন্তাটা জেঁকে ধরলো। ভাবলাম একটা বিজনেস প্লাটফর্ম দাঁড় করানো যায় কিনা। ব্যবসা নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা ছিল না। তবে আত্মবিশ্বাস ছিল। তাই অনলাইনে আম বিক্রি শুরু করলাম। প্রথম দিকে কষ্ট হচ্ছিল। তবে আমের গুণগত মান, পরিচিতি এবং হালনাগাদ দামসহ প্রতিদিন পোস্ট করতাম।’