বিদ্যালয়ের মাঠে হাট, পশুর চেয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা বেশি

কঠোর লকডাউন শিথিল ঘোষণার পরই কুড়িগ্রামে কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার ঢল নেমেছে। শুক্রবার (১৬ জুলাই) জেলার উলিপুর উপজেলার দূর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কোরবানির পশুর হাটে পশুর চেয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা ছিল বেশি। 

ক্রেতা ও বিক্রেতার ভিড়ে মাঠ পেরিয়ে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে হাটে কাউকে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন ও মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। গরুর দামও ছিল চড়া।

তবে স্বাস্থ্যবিধি পালনে ক্রেতা-বিক্রেতার উদাসীনতার দায় নিতে রাজি নন হাট ইজারাদার সিরাজুল ইসলাম টুকু। হাটে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় প্রশাসন কেন স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করেনি? আমরা এ বিষয়ে বলতে পারবো না। সরকারি নির্দেশনা মেনে হাট বসিয়েছি, দূরত্ব রক্ষার জন্য খুঁটি বসিয়েছি, হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেছি। এরপরও যদি কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মানে, তা আমাদের দেখার বিষয় না।’

তবে সরকারি নির্দেশনা পালনে ইজারাদারের দাবির শতভাগ সত্যতা হাটে মেলেনি। স্কুল মাঠে বসানো পশুর হাটে খুঁটি থাকলেও মাস্ক পরা ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা ছিল না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করেননি ইজারাদার।

উপজেলা প্রশাসন বলছে, স্বাস্থ্যবিধিসহ সব নির্দেশনা প্রতিপালন ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব ইজারাদার, হাট কমিটি ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের। তারা আইন অমান্য করলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। 

উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, ‘আমরা তাদের নির্দেশনা দিয়েছি। হাটের তদারকি করবে হাট কমিটি, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। কোনও ব্যত্যয় ঘটলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।’

শুক্রবারের হাটে নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটেছে, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ইউএনও বলেন, ‘আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’

স্কুল মাঠের ইজারা উপজেলা প্রশাসন দিতে পারে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ইউএনও বলেন, ‘এটি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। আমরা সম্প্রতি বিকল্প মাঠ খোঁজার নির্দেশনা দিয়েছি। আশা করছি, আগামীতে স্কুল মাঠে আর হাট বসবে না।’

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। তিন জনেরই বাড়ি নাগেশ্বরী উপজেলায়। এর মধ্যে দুই জন করোনা পজিটিভ ছিলেন। এ নিয়ে করোনা ইউনিটে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শুধু জুলাইয়ের ১৫ দিনে মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের।