যে কারণে বাড়লো কাঁচা মরিচের দাম

এক সপ্তাহের ব্যবধানে দিনাজপুরে কাঁচা মরিচের দাম পাঁচগুণ বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, বৃষ্টির কারণে এ জেলায় মরিচ গাছ মরে যাওয়ায় অন্য জেলা থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। এ কারণেই বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যের দাম। এদিক, দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। এ অবস্থায় মরিচ সংরক্ষণাগারের পাশাপাশি ভারত থেকে পণ্যটি আমদানির দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

দিনাজপুরের বাহাদুর বাজারে এক সপ্তাহ আগেও পাইকারিতে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। তা এখন বেড়ে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরায় মরিচের কেজি ২০০ টাকা পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির মূল্য বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। দাম অতিরিক্ত বাড়ায় কিনছেন প্রয়োজনের থেকে কম।

বাজার করতে আসা নয়ন মণি বলেন, ‘লকডাউনে এমনিতেই হাত খালি। তারপর বাজারে এসে শুনি মরিচের দাম বেশি। এক সপ্তাহ পর পর বাজার করি। এখন কোনটা ছেড়ে কোনটা কিনি তা নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছি। পাইকারি বাজারে যেখানে এক কেজি মরিচ কিনেছি ২০ টাকা করে, সেখানে এখন চাচ্ছে ১৪০ টাকা।’

দিনাজপুরের বাহাদুর বাজারের কাঁচা মরিচ ব্যবসায়ীরা

সাদেকুল ইসলাম নামের আরেক ক্রেতা বলেন, ‘প্রতিদিনই ব্যবহার হয় কাঁচা মরিচ। কয়েকদিন আগে কিনলাম ৬০ টাকা করে। এরপর ৯০, আর আজকের বাজারে ১৬০ টাকা কেজি। মরিচ ছাড়া তরকারি হয় না, আর এই দামে মরিচ কিনে খাওয়াটাও মুশকিল।’

দিনাজপুর বটহাট কলেজের প্রভাষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কাঁচা মরিচের যে দাম এতে করে শুকনা মরিচের গুঁড়া দিয়েই তরকারি রান্না করে খেতে হবে। সাধারণত বর্ষা মৌসুমে মরিচের গাছ মরে যায়, তাই দামও বৃদ্ধি পায়। যদি মরিচ সংরক্ষণের জন্য দিনাজপুরের একটা হিমাগার থাকতো, তাহলে মরিচের দামটা ঠিক থাকতো।’

বাহাদুর বাজারের বিসমিল্লাহ ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বৃষ্টি হলে মরিচের গাছগুলো মরে যায়। তখন বাইরের জেলা থেকে মরিচ আমদানি করতে হয়। বর্তমানে বাজারে আসা প্রায় সব মরিচই বাইরের জেলা থেকে আমদানি করা। তাই দাম বেশি। যদি ভারত থেকে মরিচ আমদানি হতো তবে বাজারটা ঠিক থাকার সম্ভাবনা ছিল। বর্ষা যে কয়দিন থাকবে, ২০ থেকে ২৫ দিন কিংবা এক মাস পর্যন্ত এমনই থাকবে বাজার। বৃষ্টি যদি আর না হয়, গাছগুলো যদি ঠিক হয় তবে এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে।’

বর্ণা বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী মাসুদ রানা বলেন, ‘দিনাজপুরে অতিবৃষ্টির কারণে মরিচের গাছগুলো মরে গেছে। তাই দিনাজপুরের লোকাল (স্থানীয়) মরিচটা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বাইরের জেলা থেকে মরিচ আমদানি করায় বাজারটা বাড়তির দিকে। আমরা ধারণা করছি, মরিচের দামটা আরও তুলনামূলকভাবে বাড়তে পারে। কারণ এখন যে বর্ষা পড়ছে তাতে মরিচের গাছ টিকবে না।’