তিস্তা ব্যারেজের ৪৪ গেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা 

লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায় অবস্থিত দেশের বৃহত্তম তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্প এলাকায় উজানের ঢলের পানিতে বিপৎসীমা অতিক্রম করে ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানিপ্রবাহ পরিমাপ করা হয়। ১২ ঘণ্টা পর শুক্রবার (২০ আগস্ট) সকাল ৯টায় ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিলো। এদিকে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ পাঠক নুরুল ইসলাম জানান, সকাল ১১টায় পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ভারতের গজল ডোবার সব গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় আমরাও সব গেট খুলে দিয়ে পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করছি।

জানতে চাইলে নুরুল ইসলাম বলেন, ভারতের পানিতেই বন্যা হয়েছে। এছাড়া যেভাবে ধূলিমিশ্রিত ঘোলা পানি আসছে, তাতে তিস্তার ভাটিতে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাবে। যে কারণে অল্পপানিতে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানিপ্রবাহিত হয়ে বন্যা হচ্ছে। খনন কাজ পরিচালনা ছাড়া পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশী মিজানুর রহমান বলেন, তিস্তা নদীর ভারতীয় অংশের তীরবর্তী অববাহিকা অঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রচুর ঘোলা পানি আসছে। এ কারণে তিস্তা নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে চর সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া পানি দুই তীরে উপচে পড়ার কারণে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা প্রিন্স বলেন, ‘ভারতের শিলিগুড়ি, কালিম্পক, সিকিম ও দার্জিলিংয়ে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে অতিরিক্ত পানিপ্রবাহ বেড়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে পানিপ্রবাহ অতিরিক্ত থাকায় লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার কিছু এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।’

তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর ধূলিমিশ্রিত উজানের ঢলের কারণে তিস্তা ব্যারাজের উজানে ও ভাটিতে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে পড়ছে। এ জন্য নদী খনন এখন জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।