সিআইডি’র এএসপিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা ডিবিতে

অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় দিনাজপুরে সিআইডির এএসপি, এএসআইসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। দিনাজপুরের ডিবি পুলিশের ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলা হস্তান্তরের আদেশ হয়েছে, তবে এখনও কাগজপত্র হাতে পাইনি।

মা-ছেলেকে অপহরণ: সিআইডির এএসপিসহ ৫ জন কারাগারে

তিনি বলেন, মামলায় রংপুর সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবির, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসানুল হক, মাইক্রোবাস চালক হাবিব, নিমনগর বালুবাড়ী এলাকার এনামুল হকের ছেলে ফসিহউল আলম পলাশসহ ৯ জনের নাম রয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত তিন থেকে চার জনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।

বুধবার বিকালে অপহরণের শিকার চিরিরবন্দর উপজেলার নান্দেরাই সালেমান শাহ পাড়া এলাকার লুৎফর রহমানের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ওই মামলাটি দায়ের করেন।

‘মুক্তিপণের ৮ লাখ টাকা নিতে গিয়েছিলেন সিআইডির এএসপি’

উল্লেখ্য, গত সোমবার (২৩ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে ৬-৭ জন ব্যক্তি লুৎফরের বাড়িতে অভিযান চালান। এ সময় তারা নিজেদেরকে ডিবি পুলিশ ও র‌্যাবের সদস্য পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। তারা বাড়ির আলমারি, শোকেস, ড্রয়ারসহ বিভিন্ন স্থান তছনছ করে। পরে বাড়ির মালিক লুৎফর রহমানকে না পেয়ে স্ত্রী জহুরা বেগম ও ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে তুলে নিয়ে যায়। পরে পরিবারের সদস্যরা দিনাজপুর ডিবি কার্যালয়ে খোঁজ করলে ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও অভিযান চালানো হয়নি বলে জানানো হয়। রাতে অপহরণকারীরা জাহাঙ্গীর আলমের মোবাইল থেকে ভিকটিমদের উদ্ধারের জন্য ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এক পর্যায়ে অপহরণকারীরা ১৫ লাখ টাকা দাবি করে নয়তো ভিকটিমদের হত্যার হুমকি দেয়। পরে পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি চিরিরবন্দর থানা পুলিশকে অবহিত করে এবং সেখানে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এরই মধ্যে পরিবারের সদস্যরা অপহরণকারীদের আট লাখ টাকা দিতে চায়। সেই মোতাবেক বাশেরহাট এলাকায় অপহরণকারীরা টাকা নিতে এসে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবির, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসানুল হক। পরে অপহরণকারী ও ভিকটিমদের দিনাজপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে এই ঘটনার মূল হোতা পলাশকে আটক করে। বিকালে পাঁচ জন আসামিকে দিনাজপুর আমলি আদালত-৪ (চিরিরবন্দর) এ তোলা হলে বিচারক শিশির কুমার বসু তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ সময় আসামি পলাশ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এছাড়াও উদ্ধার হওয়া দুই ভিকটিমের জবানবন্দিও নেন আদালত।