৩০ বছর পর ভোটার তালিকায় নাম উঠলো শরিফুলের

দীর্ঘ ৩০ বছর পর ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার প্রতিবন্ধী শরিফুল ইসলাম মারুফ। এতদিন পর ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পেরে আনন্দিত তিনি।

সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে মারুফের হাতে ভোটার তালিকার অনলাইন কপি হস্তান্তর করেন ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাহজাহান মানিক। এর আগে ভোটার তালিকার সূত্র ধরে মারুফের হাতে জন্মনিবন্ধন সনদ তুলে দিয়েছেন ঘোড়াঘাট পৌরসভার মেয়র আব্দুস সাত্তার মিলন।

জন্মের দেড় বছর পর ধান সিদ্ধ করা চুলায় পড়ে আগুনে পুড়ে গিয়েছিল মারুফের দুটি হাত এবং মুখের কিছু অংশ। তিনি উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের মৃত আসাদ আলীর ছেলে।

প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসন এবং সহযোগিতায় সরকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিলেও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) এবং জন্মনিবন্ধন না থাকায় কোনও সহায়তা পাননি মারুফ। 

বয়স প্রমাণে টিকার কার্ড এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার কাগজপত্র না থাকায় করতে পারেননি জন্মনিবন্ধন। পাশাপাশি পুড়ে যাওয়া দুটি হাতের ফিঙ্গার প্রিন্ট না থাকায় এবং মুখের অনেকাংশ পুড়ে যাওয়ায় চোখের আইরিস স্ক্যানে জটিলতায় ভোটার তালিকাতেও ছিল না তার অস্তিত্ব। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করা ৩০ বছর বয়সী মারুফ জন্মগতভাবে বাংলাদেশের নাগরিক হলেও কাগজে-কলমে প্রমাণ ছিল না।

সম্প্রতি এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর মারুফকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে কাজ শুরু করেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাকে ভোটার তালিকায় যুক্ত করে কমিশন।

প্রতিবন্ধী শরিফুল ইসলাম মারুফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছর পর ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পেরে আমি খুশি। কতবার আমি বিভিন্ন দফতর এবং মানুষের কাছে গেছি, জন্মনিবন্ধন ও ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য। কোনও কাজ হয়নি। এতদিন পর বিশ্বাস করতে পারছি, ভোটার হলাম।

ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাহজাহান মানিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমি উপজেলায় যোগদানের পরই মারুফসহ বেশ কয়েকজন প্রতিবন্ধীর বিষয়ে জানতে পারি। যারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি। পরে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে এসব প্রতিবন্ধীর ভোটার তালিকায় যুক্ত করার আবেদন কমিশনে পাঠাই। এখন থেকে এসব প্রতিবন্ধী ভোট দিতে পারবেন।