নীলফামারীতে পাল আমলের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান

নীলফামারীতে এই প্রথম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান পেয়েছে সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়। জেলার জলঢাকা উপজেলার গড় ধর্মপাল ইউনিয়নের পূর্ব খেরকাটি গ্রামে এর সন্ধান পাওয়া গেছে। গত তিনদিন খনন করার পর মঙ্গলবার পাল সম্রাট ধর্মপালের আমলের নিদর্শনের সন্ধান মেলে।

এছাড়াও ওই খনন এলাকা থেকে ২০০ গজ উত্তরে সবুজপাড়া নামক স্থানে আরেকটি প্রত্নতত্ত্বের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর খনন কাজ কিছুদিনের মধ্যে শুরু হবে।

১৯৯০ সালে এলাকাবাসীর আবেদনে স্থানটিতে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর খনন কাজ পরিচালনা করেছিল। ওই সময় তারা কিছু পায়নি।

এদিকে চলমান খনন কাজে ধর্মপাল গড়ের দুর্গ প্রাচীরগুলো আবিস্কারের চেষ্টা করছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়টি।

বগুড়ার মহাস্থানগড় খনন কাজের দলনেতা মুজিবুর রহমান বলেন, ‘খনন কাজের সফলতা আসতে শুরু করেছে। আশা করা হচ্ছে বিশাল এলাকাজুড়ে পাল সম্রাট ধর্মপালের আমলের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শক করা সম্ভব হবে। এটি পূর্ণাঙ্গরূপে সফলতা পেলে ধর্মপাল এলাকাটি আলোকিত হয়ে উঠবে। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’

মঙ্গলবার বিকালে স্থানটিতে পরিদর্শন করেন নীলফামারী-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা। এসময় উপস্থিত ছিলেন  রাজশাহী বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানা, রাজশাহী বিভাগের আফজাল হোসেন, বিভাগীয় আলোকচিত্রকর আবুল কালাম আজাদ, লোকমান হোসেন প্রমুখ।

পাল সম্রাট ধর্মপাল সম্পর্কে জানা যায়, তিনি ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের বাংলা অঞ্চলের পাল সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় শাসক। তিনি ছিলেন পাল রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা গোপালের ছেলে। তিনি রাজত্বের সীমানা বৃদ্ধি করেন এবং পাল সাম্রাজ্যকে উত্তর ও পূর্ব ভারতের প্রধান রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত করেন।

পাল রাজা ধর্মপাল এবং প্রতীহার রাজা বৎসরাজের মধ্যে সংঘর্ষের মাধ্যমে ৭৯০ খ্রিস্টাব্দের দিকে ত্রিপক্ষীয় যুদ্ধের প্রথম পর্ব শুরু হয়। এতে ধর্মপালের পরাজয় ঘটে এবং পরে দাক্ষিণাত্য থেকে আগত রাষ্ট্রকূট রাজা ধ্রুব ধারা বর্ষের হাতে দুজনেই পরাজিত হন।

সে সময় থেকে নীলফামারীর ওই স্থানটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। ধীরে, ধীরে সেখানকার অবকাঠামোগুলো মাটির নিচে চাপা পড়ে। তার নাম অনুসারে এলাকাটির নাম গড় ধর্মপাল হিসাবে প্রতিষ্ঠা পায়।

/এআর/এসটি/