দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের সড়কগুলো। তাই এসব সড়ক সংস্কারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে হিলি হাকিমপুর নাগরিক কমিটি। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সড়ক সংস্কারে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আমরণ অনশনসহ বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
হাকিমপুর নাগরিক কমিটির আয়োজনে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় হাকিমপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হাকিমপুর নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ও বাংলাহিলি আজিজিয়া আনওয়ারুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম সামছুল হুদা খান লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর হিলি স্থলবন্দর। এতে করে এই স্থলবন্দর থেকে সরকার প্রতি বছর শত শত কোটি টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকে। কিন্তু হিলি স্থলবন্দরের রাস্তাঘাটগুলোর বেহাল অবস্থা। বন্দরের এই রাস্তাগুলো দিয়ে আমদানি রফতানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাকগুলো চলাচলের কারণে শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো একেবারে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে করে এসব সড়ক ব্যবহারকারী পথচারী, ব্যবসায়ী, রোগী, বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষক, অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি কাজে যানাবহন চলাচলে সবাইকে সীমাহীন কষ্ট ও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়ক ও ফুটপাত দখলের কারণে প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকছে। ফলে অনেক প্রাণহানিসহ নানা দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটছে।
সামছুল হুদা খান আরও বলেন, হিলি গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর হলেও সড়ক সংস্কারের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্টরা। হাকিমপুর থানার শেষ সীমানা হতে জয়পুরহাটের পাঁচবিবির রাস্তাটি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। অথচ হাকিমপুরের মহিলা কলেজ রাস্তা হতে চেকপোস্টের শূন্যরেখা পর্যন্ত রাস্তাটির কোনও কাজ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এছাড়া হিলি রেলস্টেশনের ওপর দিয়ে ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, পঞ্চগড় ও নীলফামারী রেলপথে ২২/২৪টি ট্রেন যাতায়াত করলেও শুধুমাত্র বরেন্দ্র এক্সপ্রেস, তিতুমীর এক্সপ্রেস ও রকেট মেইল ট্রেনের একমুখি স্টপেজ ছাড়া এই রেলস্টেশনে অন্য ট্রেনের যাত্রাবিরতি নেই। এতে হিলিবাসী, বন্দরের আমদানি রফতানিকারক, বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, রোগী, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ট্রেনযাত্রা থেকে বিরত হচ্ছেন। সরকারও লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে এবং হিলিবাসীর স্বার্থে অবিলম্বে হিলি স্থলবন্দরের সবগুলো সড়কের কাজ শুরু করাসহ সব ট্রেনের যাত্রাবিরতির জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। বিশেষ করে হিলি হাকিমপুর মহিলা কলেজ হতে হিলি সীমান্তের চেকপোস্ট গেটের শূন্যরেখা পর্যন্ত এবং হিলি থেকে বিরামপুর রেলগেট পর্যন্ত রাস্তাটি দ্রুত বাস্তবায়ন করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হাকিমপুর নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান চৌধুরী মধু, জাহিদুল ইসলাম, গোলাম মোস্তাফিজার রহমান, দফতর সম্পাদক খলিলুর রহমান বাবুল, প্রচার সম্পাদক এনামুল হক খানসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা সামসুল ইসলাম, ব্যবসায়ী শ্যামল কিশোর দাস ও সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল খালেক।