বিয়ে করে ধর্ষণ মামলায় জামিন পেলেন এসআই জলিল

বিয়ে করার শর্তে জামিন পেয়েছেন বিয়ের কথা বলে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার কুড়িগ্রাম সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল জলিল। 

বুধবার (২৩ মার্চ) দুপুরে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিয়ে করার শর্তে জামিন আবেদন করেন তিনি। বিকালে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার তার জামিন আবেদনে কাবিননামা দাখিলের আদেশ দেন। পরে কাবিননামা দিলে জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক।

জামিনের পর জেলা আইনজীবী সমিতির ভবনে ওই নারীকে বিয়ে করেন এসআই আব্দুল জলিল। বিয়েতে সাত লাখ ৯৫ হাজার টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করা হয়। এ সময় দুই পক্ষের আইনজীবী, পরিবারের সদস্য ও জলিলের প্রথম স্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। এরপর সবাইকে মিষ্টিমুখ করানো হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ জানুয়ারি এই মামলায় এসআই জলিলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরে তিনি উচ্চ আদালতের আদেশে ছয় সপ্তাহের জামিনে ছিলেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হলে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে গত রবিবার (২০ মার্চ) দুপুরে আত্মসমর্পণ করে স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

ভুক্তভোগী নারী (৪৩) বলেন, ‘এতদিন জলিলের কাছে স্ত্রীর স্বীকৃতি তো দূরের কথা বিয়ের কাবিননামা চেয়েও পাইনি। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আদালতে মামলা করার পর আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি। এজন্য আমি খুশি।’

বাদীপক্ষের আইনজীবী মেহেদী হাসান মিলন বলেন, ‘আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এই রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভুক্তভোগী সঠিক বিচার পেয়েছেন।’

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল জমি সংক্রান্ত বিরোধে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন বিধবা ওই নারী। জিডি তদন্ত করতে গিয়ে পঞ্চগড় সদর থানার তৎকালীন এসআই আব্দুল জলিল ওই নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়েন। এরপর ভুয়া কাবিননামা করিয়ে ওই নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। 

একসময় ওই নারী কাবিননামা চাইলে বিয়ের কথা অস্বীকার করেন জলিল। পরে ওই নারী ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর পঞ্চগড় নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেন। গত ২০ জানুয়ারি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেন। ২৩ জানুয়ারি আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে এসআই জলিলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।