ভাইস চেয়ারম্যানের ছেলের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানকে চড়-থাপ্পড়ের অভিযোগ

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ইসরাত জাহান স্মৃতির ছেলে অন্তর মিয়ার (২৫) বিরুদ্ধে ৫ নম্বর ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন মিলনকে চড়-থাপ্পড় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৩০ মার্চ) বিকালে উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। 

চেয়ারম্যান মিলনের অভিযোগ, ‘২৭ মার্চ অন্তর মিয়া পরিষদে এসে আমার কাছে কর্মসৃজন প্রকল্পে পাঁচ-ছয় জন লোকের নাম তালিকায় সংযুক্ত করতে বলে। তালিকায় নাম সংযুক্ত করা যাবে না জানালে অন্তরের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। এরই জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে অন্তর আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।’ 

তিনি বলেন, ‘বুধবার বিকালে উপজেলা পরিষদের আইনশৃঙ্খলা ও মাসিক মিটিং শেষ করে গেটের সামনে বের হলে অন্তরসহ চার-পাঁচ জন আমাকে টেনেহিঁচড়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে যায়। এরপর অন্তর ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে চড়-থাপ্পড় দেয়। ঘটনার সময় অন্তরের সঙ্গে তার মা ভাইস চেয়ারম্যান ইসরাত জাহান স্মৃতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহীদুল্যা-হেল কবির ফারুক ছিলেন। তাৎক্ষণিক উপস্থিত লোকজন অন্তরকে নিয়ে যায়। পরে ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অন্যান্য চেয়ারম্যানদের জানাই। একই সঙ্গে থানায় লিখিত অভিযোগ দিই।’ 

এ বিষয়ে অন্তর মিয়ার বাবা শাহজাহান সরকার বলেন, ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি জানার পর আমরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে সমাধানের চেষ্টা করেছি। সেখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল জলিল সরকার, সহ-সভাপতি মোজাহারুল ইসলামসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।’

সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোখসানা বেগম বলেন, ‘চেয়ারম্যানকে লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি দুঃখজনক। এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চেয়ারম্যানকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

সাদুল্লাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল জলিল সরকার বলেন, ‘ঘটনার পর তাৎক্ষণিক উভয়পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করা হয়। সেখানে বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে সময় নেওয়া হয়েছে। ঘটনার সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুকের উপস্থিতির বিষয়টি খতিয়ে দেখাসহ দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহীদুল্যা-হেল কবির ফারুক বলেন, ‘চেয়ারম্যানের সঙ্গে অন্তরের দ্বন্দ্বের বিষয়টি সমাধানের জন্য বৈঠকে বসেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অন্তর এমন ঘটনা ঘটাবে তা জানা ছিল না। এ ঘটনায় আমার ইন্ধন নেই।’

সাদুল্লাপুর থানার ওসি প্রদীপ কুমার বলেন, ‘এ ঘটনায় চেয়ারম্যান মিলন তিন জন নামীয় ও অজ্ঞাত চার-পাঁচ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে, চেয়ারম্যান মিলনকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা। ঘটনায় অভিযুক্ত অন্তরসহ জড়িতের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।