প্রভোস্টের পদত্যাগ, লোডশেডিং বন্ধ ও ডাইনিংয়ের খাবারের মান বৃদ্ধিসহ ১২ দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আন্দোলন শুরু করেন তারা। পরে হলের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। রাত ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে হলে ফিরে যান তারা। তবে এসব বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে এখনও।
বিক্ষোভের সময় প্রভোস্টসহ হল প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা গেছে ছাত্রীদের। হলের রেজিস্ট্রার ও হল প্রভোস্টের পদত্যাগসহ ১২ দফা দাবি উল্লেখ করেন তারা।
তাদের দাবিগুলো হলো- প্রভোস্টকে শিক্ষার্থীবান্ধব এবং মার্জিত ব্যবহারের হতে হবে তা না হলে পদত্যাগ করতে হবে; ডাইনিংয়ের খাবারে ভর্তুকি, খাবারের মান উন্নয়ন করতে হবে; রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ; চার নম্বর ফটক খোলা রাখা; ওয়াইফাইয়ের লাইন ঠিক করে প্রতিটি রুমে রাউটারের ব্যবস্থা করতে হবে; প্রত্যক রুমে জরুরি ভিত্তিতে ফ্যান লাগিয়ে দিতে হবে; হলের প্রত্যেক কর্মচারীর ব্যবহার ভালো করতে হবে অন্যথায় পরিবর্তন করতে হবে; আবাসিক ভাড়া কমিয়ে ৫০ টাকা করতে হবে; নির্মাণাধীন হলের কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে; রিডিং রুম, কমন রুম ও গেস্ট রুম দিতে হবে এবং পরিষ্কারের জন্য সুইপারদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, হলে ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। এতে লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটছে। পাশাপাশি রমজান শুরু হওয়ার পর থেকে বিকালে বিদ্যুৎ থাকে না। বিষয়টি নিয়ে হল কর্তৃপক্ষকে বারবার জানালেও কোনও সমাধান করেননি। বাধ্য হয়ে প্রভোস্ট তানিয়া তোফাজকে ফোন দেন। ফোন পেয়ে প্রভোস্ট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এরপর শিক্ষার্থীরা হল থেকে বেরিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
হলের শিক্ষার্থী আশফিয়া, সাবরিনা ও রোমানা আক্তার ও আফরিন অভিযোগ করেন, অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে অতিষ্ঠ আমরা। প্রতিদিন বিকাল থেকে শুরু হয়ে ইফতারের আগ বিদ্যুৎ থাকে না। হলের দায়িত্বশীলদের বলেও সমাধান পাচ্ছি না। পাশাপাশি রমজানে হলের খাবার নিম্নমানের। বারবার বললেও খাবারের মান ঠিক হয়নি। বাধ্য হয়ে ১২ দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছি আমরা।
আন্দোলনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান ও প্রক্টর গোলাম রাব্বানী। শিক্ষার্থীদের দাবি নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিয়ে রাত ১০টায় ছাত্রীদের হলে পাঠিয়ে দেন প্রক্টর। পরে ছাত্রীদের হলের ভেতরে রাত ১১টা পর্যন্ত আলোচনা করেন হল প্রভোস্ট তানিয়া তোফাজ। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
তানিয়া তোফাজ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ১২ দফা দাবি লিখিতভাবে জানালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের ব্যবস্থা করবো। এখনও তারা দাবিগুলো লিখিত আকারে দেয়নি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রাব্বানী বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কথা শুনে প্রথমে সহকারী প্রক্টরকে পাঠিয়েছি। পরে আমি গিয়ে তাদের শান্ত করেছি। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যৌক্তিক। তাদের সব সমস্যার সমাধান করা হবে। বিদ্যুতের যে সমস্যা ছিল সেটির সমাধান করা হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকি সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে যাবে।’