গোর-এ শহীদ ময়দানে দেশের ‘বৃহত্তম জামাতে’ ৬ লাখ মুসল্লি

আয়তনে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ দিনাজপুর গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। আয়োজকরা জানিয়েছেন, এবারে এই মাঠে একসঙ্গে ছয় লক্ষাধিক মুসল্লির অংশগ্রহণে দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল ৯টায় এই নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা শামসুল হক কাসেমী। এই নামাজে জেলার ১৩টি উপজেলার পাশাপাশি আশপাশের জেলাগুলো থেকেও মুসল্লিরা অংশ নেন।

এখানে নামাজে অংশ নেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমসহ অনেকে। নামাজ শেষে এই ঈদগাহ মাঠ ও মিনার নির্মাণের উদ্যোক্তা এবং পরিকল্পনাকারী হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, ‘এবার এই মাঠে একসঙ্গে ছয় লক্ষাধিক মুসল্লি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নামাজ আদায় করেছেন।’

দিনাজপুরের পুলিশ সুপার বলেন, ‘যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর ছিলেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ৬৫৯ জন অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্য মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করেছেন। এ ছাড়াও পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, ডিবি, ডিএসবি, এনএসআই, ডিজিএফআই সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করেছেন। মাঠে ৩০টি সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন করে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।’

দিনাজপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গোর-এ শহীদ বড় ময়দানের আয়তন প্রায় ২২ একর। ২০১৭ সালে নির্মিত ৫২ গম্বুজের ঈদগাহ মিনার তৈরিতে খরচ হয়েছে তিন কোটি ৮০ লাখ টাকা। এর গম্বুজের দুই ধারে ৬০ ফুট করে দুটি মিনার। মাঝের দুটি মিনার ৫০ ফুট করে। ঈদগাহ মাঠের মিনারের প্রথম গম্বুজ অর্থাৎ মেহরাবের (যেখানে ইমাম দাঁড়ান) উচ্চতা ৪৭ ফুট। এর সঙ্গে রয়েছে আরও ৪৯টি গম্বুজ। এ ছাড়া ৫১৬ ফুট লম্বায় ৩২টি আর্চ নির্মাণ করা হয়েছে। উপমহাদেশে এত বড় ঈদগাহ মাঠ দ্বিতীয়টি নেই। পুরো মিনার সিরামিক্স দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি গম্বুজ ও মিনারে রয়েছে বৈদ্যুতিক লাইটিং। রাত হলে ঈদগাহ মিনার আলোকিত হয়ে ওঠে। ২০১৭ সাল থেকেই প্রতিবারে এখানে ঈদের নামাজ আদায় করছেন দিনাজপুর জেলাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা-উপজেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। তবে করোনার প্রকোপে গত দুই বছরে এই মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় এবারে ঈদের জামাতের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন সংশ্লিষ্টরা।