অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলাসহ অন্যান্য নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদী বেষ্টিত তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজান, সিঙ্গিমারীসহ অন্যান্য নদীর দুই ধারের এবং চরে বসবাসকারী কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আরও বেশ কয়েকদিন এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, বুড়িমারী, শ্রীরামপুর, পাটগ্রাম পৌরসভা, হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, গোড্ডিমারী, ডাউয়াবাড়ি, সিঙ্গিমারী, সিন্দুর্ণা, পাটিকাপাড়া, কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভাণ্ডার, ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ও লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, মোগলহাট, কুলাঘাট ও বড়বাড়ী ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামে ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি মানুষের বাড়ি-ঘরে প্রবেশ করেছে।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গোড্ডিমারী ইউনিয়নে অবস্থিত তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে বিকাল ৩টায় তিস্তা নদীতে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পানি পরিমাপক নুরুল ইসলাম। অপরদিকে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান।
হাতীবান্ধা উপজেলার গোড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবু বক্কর সিদ্দিক ও ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান বলেন, তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে তিস্তার চরে এবং দুই তীরে বসবাসকারী কয়েকশ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে। এসব পরিবারের মধ্যে শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ত্রাণসহ বিভিন্ন উপকরণের সংকট দেখা দিয়েছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে কিছু পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাটের পানি পরিমাপককর্মী অ্যাডভোকেট চিত্ত রঞ্জন রায় বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাটে ৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া আরও কয়েকদিন অপরিবর্তীত থাকতে পারে।’
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, ‘বন্যা মোকাবিলায় ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের তৎপর হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কোথাও কোনও ক্ষয়ক্ষতি হলে তা উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তালিকা করে পাঠাতে বলা হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের।’ তালিকা এলে তা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।