ছাত্রলীগ নেতাকে থানায় ডেকে নির্যাতনের অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় মিজানুর রহমান নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে থানায় ডেকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসুলের বিচার দাবিতে শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা ছাত্রলীগ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজিদ মাহবুব মেলভিন। 

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কোনও কমিটি নেই। তাই আমি জাতীয় শোক দিবসে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেন মিজানুর রহমানসহ শত শত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী। এতে কতিপয় নেতা ক্ষিপ্ত হয়ে হয়তো ওসি গোলাম রসুলকে দিয়ে ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমানকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে থানায় আটকে মানসিক নির্যাতন করেছে।’

সাজিদ মাহবুব আরও বলেন, ‘মিজানুরকে নির্যাতনের সময় ওসি বলেন, ‌‘‘এই ব্যাটা, তুই ১৫ আগস্ট শোক র‌্যালিতে কেন গিয়েছিলি? জবাবে মিজানুর বলেন, ‘‘আমি একজন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। দলকে ভালোবেসে মিছিলে গিয়েছি’’। তখন ওসি বলেন, ‘‘তোকে আর কখনও যেন মিছিল-মিটিংয়ে না দেখি। তোর বাপকে নিয়ে আয়। তোকে তো থানায় তুলে নিয়ে আসছি। এখন তোর কোন বাপ তোকে বাঁচায়। তুই তো ব্যাটা অনেক বাড় বাড়ছিস। তোর পরিবারের সদস্যদের অমানবিক অত্যাচারের সঙ্গে সঙ্গে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেবো।’  

বিষয়টি জেলা ছাত্রলীগ ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন সাজিদ মাহবুব মেলভিন।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি গোলাম রসুল বলেন, ‘মিজানুর রহমান থানায় বিভিন্ন সময় নানান ঘটনায় তদবির করতে আসতো। মোবাইল ফোন হারানো একটি জিডির বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে শনিবার দুপুরে এএসআই সেলিমের কাছে আসে। গত ৩১ আগস্ট কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী যুব মহিলা লীগের সম্মেলনের সময় হঠাৎ মিজানসহ কতিপয় যুবক মিছিল করে। এতে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা দেখা দেয়। এই বিষয়ে তার সঙ্গে আমার কক্ষে কথা হয়েছিল। সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। তার সঙ্গে কোনও খারাপ আচরণ করা হয়নি। অথচ আমার বিরুদ্ধে রাতে সংবাদ সম্মেলন করেছে তারা।’

তিনি আরও বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও আমার বিরুদ্ধে পোস্ট করা হয়েছে। আমার ডোপ টেস্টের দাবি করেছে। এই মিথ্যাচারের বিষয়ে আমি আল্লাহর কাছে বিচার চেয়েছি। এছাড়া আমার কী করার আছে?’

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ ইসলাম বলেন, ‘কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি পদপ্রার্থী মিজানুর রহমানকে মানসিকভাবে নির্যাতনের বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছি। তদন্ত করে কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’