হাসপাতালে চিকিৎসকের মায়ের কাছ থেকে চাঁদা আদায়, দুজনকে অব্যাহতি

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত অর্থোপেডিকস বিভাগের চিকিৎসক এবিএম রাশেদুল আমীরের মা অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে এসে হয়রানির শিকার হয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাসপাতালের দুই চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী মাসুদ ও ঝর্ণা বেগমকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরিফুল ইসলাম অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, দুই কর্মচারীকে অব্যাহতির আদেশটি সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। যার স্মারক নম্বর ৩০৮৪, তারিখ ১৯ সেপ্টেম্বর। তবে বিষয়টি মঙ্গলবার জানাজানি হয়। অন্যদিকে অভিযোগকারী চিকিৎসক রবিবার হাসপাতালের পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন বলে অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে।

ডা. এ বি এম রাশেদুল আমীর অভিযোগে উল্লেখ করেন, শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তার মা হৃদরোগে আক্রান্ত হলে হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রবীন্দ্রনাথের পরামর্শে পরিবারের লোকজন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। জরুরি বিভাগ থেকে ভর্তি ফি বাবদ ২৫০ টাকা দাবি করা হয়। এ সময় তার স্বজনরা ডাক্তারের মা বলে পরিচয় দেওয়া সত্ত্বেও ৫০ টাকা ফি আদায় করে। অথচ জরুরি বিভাগে রোগী এলে সরকারি ফি হচ্ছে মাত্র ২৫ টাকা। যেখানে ২৫ টাকা ফি নেওয়ার কথা সেখানে প্রথমে ২৫০, পরে ডাক্তারের মা পরিচয় দেওয়ার পরও ৫০ টাকা জোর করে নেওয়া হয়েছে। পরে সিসিইউতে পাঠালে তাদের কাছ থেকে ফের ২০০ টাকা নেয়। পরিচয় দিলেও দুই কর্মচারী ডাক্তারের মা হলেও ২০০ টাকা দিতে হবে বলে জানায়।

পরে রাতে মায়ের শয্যাপাশে অবস্থানকালে সিসিইউর ওয়ার্ড বয় পরিচয়দানকারী মাসুদ সরাসরি ডা. আমিরের কাছে টাকা দাবি করেন। ডা. আমীর এ সময় মাসুদের সঙ্গে কথোপকথনের কিছু ভিডিওচিত্র ধারণ করেন।

এদিকে, ডা. আমীর ঘটনার বিবরণ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে বিচার দাবি করলে নগরীজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। পরে ব্যাকডেট দিয়ে দুই কর্মচারীকে অব্যাহতি দেওয়ার চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই কর্মকর্তা জানান।

সার্বিক বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরীফুল ইসলাম জানান, মাসুদ ও ঝর্ণা বেগম হাসপাতালের কর্মচারী নন। তারা মেসার্স সাবাহ এন্টারপ্রাইজের কর্মচারী। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পর তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।