এসএসসির প্রশ্নফাঁস: রিমান্ড শেষে কারাগারে দুই শিক্ষক

চলমান এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় গ্রেফতার কুড়িগ্রামের দুই শিক্ষককে রিমান্ড শেষে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। তারা হলেন ভূরুঙ্গামারী উপজেলার নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুর রহমান রাসেল ও জোবায়ের হোসেন।

মঙ্গলবার (২ অক্টোবর) সকালে তাদের কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি আলমগীর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত রবিবার (২ অক্টোবর) নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুর রহমান রাসেল এবং ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক জোবায়ের হোসেনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

আদালতের আদেশের পর তাদেরকে ভূরুঙ্গামারী থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। দুই দিনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মঙ্গলবার তাদের আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। এরপর কারাগারে পাঠানো হয়। 

এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমানকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ২ অক্টোবর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমানসহ ওই বিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষক ও এক পিয়নকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লুৎফর রহমান এবং একই বিদ্যালয়ের দুই সহকারী শিক্ষককে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।’

ওসি আরও বলেন, ‘গ্রেফতার শিক্ষকদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। পাশাপাশি অপর পলাতক আসামি ও বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আবু হানিফকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

প্রসঙ্গত, চলমান এসএসসি পরীক্ষায় গত ২০ সেপ্টেম্বর ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষার দিন নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটে। ওই কেন্দ্রের সচিব ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমানের কক্ষ থেকে ছয় বিষয়ের প্রশ্নপত্র উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বিষয়গুলোর পরীক্ষা তখনও অনুষ্ঠিত হয়নি। ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, কৃষি ও রসায়ন—এই চার বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিতসহ ছয় বিষয়ের প্রশ্ন বাতিল করে শিক্ষাবোর্ড। 

ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান, ওই বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুর রহমান রাসেল, ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক জোবায়ের হোসেন এবং অফিস সহকারী আবু হানিফের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটি। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমানসহ পাঁচ শিক্ষক ও এক পিয়নকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পলাতক রয়েছেন অফিস সহকারী আবু হানিফ।