রংপুর মেডিক্যাল নিয়ে স্বাস্থ্যের অতিরিক্ত ডিজির বিস্ফোরক মন্তব্য

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) ডা. আহমেদুল কবীর বলেছেন, ‘রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। এমন অবস্থায় আজ এই হাসপাতাল থেকে শুরু করে পুরো রংপুর বিভাগে শুদ্ধি অভিযান শুরু করলাম। পরিষ্কার মেসেজ দিতে চাই, হাসপাতালে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করবোই। কোনও অনিয়ম, মাস্তানি এবং যে যত বড়ই হোক আর শক্তিশালী হোক, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই। এখন থেকে কোনোভাবেই হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা কারও কাছে জিম্মি থাকবে না।’

বুধবার (১২ অক্টোবর) দুপুর পৌনে ১টায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক ও সুধীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দিতে এসে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন তিনি।

ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, ‘যেখানে হাসপাতালের চিকিৎসকরাই চিকিৎসা নিয়ে শঙ্কিত সেখানে সাধারণ জনগণ কীভাবে চিকিৎসা পাবে? হাসপাতালটি কিছু কর্মচারী আর সিন্ডিকেট চক্রের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে কর্মচারী আর সিন্ডিকেট চক্রের অনেককে বদলি করা হয়েছে।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত ডিজি আরও বলেন, ‘আমরা বেশ কিছু দিন ধরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলাম। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, সাধারণ রোগী, এমনকি চিকিৎসকরা কিছু সংখ্যক কর্মচারী ও সিন্ডিকেট চক্রের কাছে জিম্মি। এখানে পরিচালক থেকে শুরু করে কোনও জায়গায় যদি লিকেজ থাকে তাহলে জনগণ চিকিৎসা সেবা পাবে না। এই অপকর্ম বহুদিন ধরে চলে আসছিল। আমরা বিভিন্ন অনুসন্ধান করে জানতে পেরেছি, কিছু স্টাফ এর সঙ্গে জড়িত। আমরা কয়েকজনকে বহিষ্কার করেছিলাম। তারপরও তারা অবস্থান নিয়ে রোগীদের জিম্মি করে রেখেছিল। তাদের সঙ্গে একটি চক্র জড়িত।’

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ১৬ জন কর্মচারী তিন জন উপ ও সহকারী পরিচালককে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বদলি করা হয়েছে। এটাই শেষ নয়, স্পষ্ট মেসেজ দিতে চাই, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা কারও কাছে জিম্মি থাকবে না।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, সচিবের সঙ্গে কথা বলে এসেছি। এবার অনিয়ম, দুর্নীতির শেকড় উপড়ে ফেলা হবে। ভর্তি থাকা রোগীরা সব ধরনের পরীক্ষা হাসপাতাল থেকে গ্রহণ করবে। বাইরে থেকে কোনও ধরনের পরীক্ষা করা চলবে না। যেসব মেশিন অচল হয়ে গেছে সেগুলো দ্রুত সচল করা হবে। সেই সঙ্গে হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগ সার্বক্ষণিক চালু থাকবে। কোনও অনিয়ম হলে তাৎক্ষণিক কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এর আগে, ঢাকা থেকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজে এলে তাকে চিকিৎসক ও কর্মকর্তারা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. বিমল চন্দ্র, হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরিফুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি সব স্তরের চিকিৎসক ও রংপুরের সুধীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।