টাকার অভাবে চিকিৎসা না পেয়ে বিছানায় কাতরাচ্ছে স্কুলছাত্র রিফাত

হঠাৎ একদিনের জ্বরে কোমর থেকে পা পর্যন্ত অবশ হয়ে পড়ে রিফাত হোসেনের (১৪)। এরপর থেকে টানা ছয় মাস বিছানায় পড়ে আছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্যারাপ্লিজিয়া রোগ ধরা পড়েছে। এখন চলাচলের শক্তিও হারিয়ে ফেলেছে এই কিশোর।

স্বজনরা বলছেন, রিফাতের চিকিৎসার জন্য ছয় লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু চিকিৎসার ব্যয় বহন করার মতো আর্থিক অবস্থা তার পরিবারের নেই। এ পর্যন্ত চিকিৎসা বাবদ প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় করে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন তার রিকশাচালক বাবা।

নীলফামারীর সৈয়দপুরের খাতামধুপুর ইউনিয়নের মুশরত ধুলিয়া চৌধুরীপাড়া গ্রামের সাদিকুল ইসলাম ও মেনিরা বেগমের মেজো ছেলে রিফাত। সে হাজারীহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। 

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ এপ্রিল দুপুরে হঠাৎ জ্বর আসে রিফাতের। প্রাথমিক চিকিৎসায় রাত শেষে জ্বর কমলেও কোমর থেকে নিচের অংশ অবশ হয়ে যায়। সকালে বিছানা থেকে কোনোভাবেই উঠতে পারছিল না। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক জানান, রিফাত প্যারাপ্লিজিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে। সেই থেকে আজও সে শয্যাশায়ী। ইতোমধ্যে চিকিৎসা বাবদ প্রায় পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তার রিকাশাচালক বাবা ধার-দেনা এবং এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ব্যয় করেছেন।

সাদিকুল ইসলাম বলেন,‌ ‘চিকিৎসকের পরামর্শে কোনোরকমে ওষুধ খাইয়ে আমার ছেলেকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। চিকিৎসক বলেছেন, তার মেরুদণ্ডের রগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে দাঁড়ানোর মতো শক্তি পাচ্ছে না। দুই পা ও কোমর অবশ হয়েছে। অপারেশন করলে পুরোপুরি সুুস্থ হবে। এতে প্রায় ছয় লাখ টাকার প্রয়োজন হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার পক্ষে এত টাকার ব্যবস্থা করা সম্ভব না। সমাজসেবা অধিদফতর থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা চিকিৎসা বাবদ অনুদান পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও তা অনেক সময় সাপেক্ষ এবং তদবিরের বিষয়। অথচ আমার বাচ্চা ছেলের অবস্থা দিন দিন খুবই খারাপের দিকে যাচ্ছে।’

রিফাতের মা মেরিনা বেগম বলেন, ‘কোমর থেকে দুই পা অবশ হওয়ায় পায়খানা-প্রস্রাব স্বাভাবিকভাবে হয় না। প্রস্রাবের জন্য পেট ফুটো করে পাইপ লাগানো হয়েছে। আর পায়খানার জন্য ১৫ দিন পর পর ২৫০ টাকা দামের ওষুধ খাওয়াতে হয়। মলত্যাগে অনেক কষ্ট হয়। এজন্য বেশি খেতেও চায় না। ফলে শারীরিক শক্তিও কমে যাচ্ছে। দিন রাত বিছানায় পড়ে থাকে আমার ছেলে।’

সরেজমিন দেখা যায়, ঘরের বারান্দায় একটি কাঠের চৌকিতে শুয়ে আছে রিফাত। অনেক চেষ্টার পর দুই-একটা কথা বললো। এ সময় আকুতি জানিয়ে রিফাত বলে, ‘আমি আবারও হাঁটতে চাই। স্কুলে যেতে চাই, বন্ধুদের সাথে খেলতে চাই। আমাকে আপনারা সুস্থ করে তোলেন। আমি আর সহ্য করতে পারছি না।’

পাড়া-প্রতিবেশী ও স্বজনরা বলেন, ‘আমরা সবাই চেষ্টা করে হয়তো এক লাখ টাকা সংগ্রহ করতে পারবো। কিন্তু তাতে কাজ হবে না। তাই হৃদয়বান ধনী ব্যক্তিদের সামর্থ্যানুযায়ী সাহায্যের আবেদন জানাই।’

রিফাতকে সাহায্য পাঠাবেন যেভাবে

সাদিকুল ইসলামের সঞ্চয়ী ব্যাংক হিসাব নম্বর-৫৩১০০০২৯০৬২৩৮, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, সৈয়দপুর শাখা, নীলফামারী। বিকাশ নম্বর: ০১৯৯১-৫৮৬৮৪১ (ব্যক্তিগত)।