ইলিশ সংরক্ষণে ব্রহ্মপুত্রে অভিযান

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রে ইলিশ শিকার ও বিক্রির সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ। গত তিন দিন ধরে সদর ও উলিপুরসহ জেলার ছয়টি উপজেলায় মা ইলিশ শিকারবিরোধী অভিযান জোরদার করেছে মৎস্য বিভাগ। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানও বাড়ানো হয়েছে। 

শুক্রবার (২১ অক্টোবর) ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেছে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত জেলা টাস্কফোর্স কমিটি। জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্র ও জেলা পুলিশ থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে ‘প্রশাসন থেকে পুলিশের লোক সবাই ইলিশ কিনছেন’ শিরোনামে গত ১৮ অক্টোবর বাংলা ট্রিবিউনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপরই নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও মৎস্য বিভাগ। বাড়ানো হয় ইলিশ শিকার ও বিক্রি প্রতিরোধে অভিযান। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত জেলা টাস্কফোর্স কমিটি ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযান সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিমের নেতৃত্বে টাস্কফোর্সের বিশেষ অভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায়, উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোভন রাংশাসহ সদর, উলিপুর ও নাগেশ্বরী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তারা। অভিযানকালে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার স্থানীয় জেলেসহ উপস্থিত সবাইকে আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মা ইলিশ শিকার থেকে বিরত থাকার সরকারি নির্দেশ প্রতিপালনের আহ্বান জানান।  

এছাড়া অভিযানকালে টাস্কফোর্স কমিটি নদীভাঙন, চরের নাগরিকদের শিক্ষাব্যবস্থাসহ দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় সবাইকে অবদান রাখার আহ্বান জানায়।

মৎস্য বিভাগ জানায়, ২১ অক্টোবর পর্যন্ত গত এক সপ্তাহের অভিযানে জেলার নদ-নদী থেকে প্রায় লক্ষাধিক মিটার ইলিশ জাল জব্দ করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৫ লাখ ২৮ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে শুক্রবার (২১ অক্টোবর) ব্রহ্মপুত্র নদে অভিযান চালিয়ে ৮৮ হাজার ৫০০ মিটার জাল জব্দ করে মৎস্য বিভাগ। যার বাজার মূল্য ছয় লাখ ৯০ হাজার টাকা। পরে জব্দ জাল পুড়িয়ে ফেলা হয়।

মৎস্য বিভাগ আরও জানায়, শুক্রবার সারাদিন জেলার সদর, উলিপুর, চিলমারী ও রৌমারী উপজেলায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে প্রায় ৬০ হাজার মিটার জাল জব্দ করে মৎস্য বিভাগ। অবশিষ্ট জাল উলিপুর, চিলমারী ও রৌমারী থেকে উদ্ধার করা হয়। অভিযানে ১২ কেজি ইলিশ উদ্ধার করে তা দুটি মাদ্রাসায় বিতরণ করা হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) কালিপদ রায় বলেন, শুক্রবার পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে এক লাখ ৪০ হাজার ৮০০ মিটার ইলিশ জাল জব্দ করা হয়েছে। যার বাজারমূল্য ১৫ লাখ ২৮ হাজার ৫০০ টাকা। এছাড়া ৪০টি অভিযানে ১১টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় মোট ৫৫ কেজি ইলিশ জব্দ করে তা বিভিন্ন এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।