৪ বছর পর রহস্য উন্মোচন, মাকে হত্যা করেছে ছেলে

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় জাহানারা বেগম (৭০) হত্যা মামলার চার বছর পর রহস্য উন্মোচন করেছে রংপুরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এই ঘটনায় নিজ মাকে হত্যা করার অপরাধে ছেলে আব্দুর রহিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (২ নভেম্বর) রংপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার জাকির হোসেন জানান, ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার রুপাহারা গ্রামের মৃত আতাউর রহমান আতা মিয়ার স্ত্রী জাহানারা বেগমকে ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান তার মেয়ে নাজমা বেগম। এরপর তিনি মাকে প্রথমে ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ওই বছরের ২৪ আগস্ট তিনি মারা যান। প্রথমে একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়। পরে ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল নিহতের মেয়ে নাজমা বেগম বাদী হত্যা মামলা করেন।

তিনি বলেন, ডিমলা থানা পুলিশ তদন্ত করে হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে না পারলে পুলিশ সদরদফতরের নির্দেশে মামলাটি পিবিআই রংপুরে হস্তান্তর করা হয়। সদরদফতরের নির্দেশে পুলিশ পরিদর্শক যতীন্দ্রনাথ শর্মা, পিবিআই রংপুর মামলাটি তদন্ত শুরু করেন।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মামলাটি তদন্তকালে পিবিআই জানাতে পারে, জাহানারা বেগম তার নিজ নামীয় ৩৭ শতক জমির মধ্যে ১৭ শতক জমি ছেলে তারা মিয়া ও ২০ শতক জমি আব্দুর রহিমকে লিখে দেন এই মর্মে, তারা তাকে ঠিকমতো ভরণপোষণ দেবেন। কিন্তু আব্দুর রহিম মায়ের কাছ থেকে ভরণপোষণের কথা বলে কৌশলে জমি লিখে নিলেও মাকে ভরণপোষণ দিতেন না। এই নিয়ে মা-ছেলের মধ্যে প্রায় ঝগড়া লেগে থাকতো। ঘটনার দিন রাতে মা জাহানারা বেগম জানতে পারেন, তার দেওয়া ২০ শতক জমি ছেলে রহিম বিক্রি করবেন। এই নিয়ে মা ছেলেকে জমি বিক্রি করতে নিষেধ করলে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ছেলে পাশে থাকা কাঠের ফালি দিয়ে মায়ের মাথায় সজোরে আঘাত করেন। মৃত্যুর পর ছেলে দীর্ঘদিন বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়ায়।

তিনি বলেন, হত্যার চার বছর পর গত সোমবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা যতীন্দ্রনাথ শর্মার নেতৃত্বে পিবিআই রংপুরের একটি আভিযানিক দল আসামিকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তাকে বুধবার আদালতে চালান দেওয়া হলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।

রংপুর পিবিআই পুলিশ সুপার আরও বলেন, পিবিআই সত্যকে উদঘাটনে সর্বদা অবিচল। ছেলের দ্বারা মাকে হত্যার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনার সত্য উদঘাটন করতে পেরেছি। যত দ্রুত সম্ভব মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে।