হিলিতে জেঁকে বসেছে শীত, বিপাকে খেটে খাওয়া মানুষ

দেশের সবচেয়ে উত্তরের জেলা দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলিতে শীত জেঁকে বসেছে। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় শীতের মাত্রা আরও বেড়েছে। শীতে কাজে যেতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। জীবিকার তাগিদে কেউ কেউ বের হলেও আক্রান্ত হচ্ছেন শীতজনিত নানা রোগে। 

প্রতিদিন বিকালের পর থেকে কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে চারপাশ। সন্ধ্যা থেকে কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে পরদিন দুপুর পর্যন্ত ঝরছে। প্রায় দিনভর কুয়াশায় ঢাকা থাকছে পুরো এলাকা। প্রায় দিনই সূর্যের দেখা মিলছে না। কোনও দিন সূর্যের দেখা মিললেও এর তীব্রতা নেই। কুয়াশার কারণে দিনেও সড়কে আলো জ্বেলে যানবাহন চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।

হিলি-২

ষাটোর্ধ্ব আব্দুর রাজ্জাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‌‘গত কয়েকদিন ধরে যে শীত পড়েছে তাতে আমাদের মতো বয়স্ক মানুষদের খুবই কষ্ট হচ্ছে। আমরা ঠিকমতো চলতে ফিরতে পারছি না। বাড়ির বাইরেও যেতে পারছি না। আমাদের মতো বয়স্ক মানুষদের সময়মতো ওষুধ খাওয়া মুশকিল হয়ে গেছে। আমরা যে কীভাবে খাবো, কীভাবে চলবো। আমাদের দিকে সরকার একটু নজর দিলে অনেক উপকার হতো।’

নৈশপ্রহরী ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আমরা হিলি বাজারের নৈশপ্রহরী। কয়েকদিন ধরে তীব্র শীত পড়ছে। তার মধ্যেই বাজারের অলিগলি বেড়ানো লাগে। আমরা পোশাক পরে আছি সেটা দিয়ে শীত নিবারণ করা সম্ভব হচ্ছে না। কেউ যে একটু শীতের গরম কাপড় বা কম্বল দেবে সেটাওও দিচ্ছে না। খুব কষ্ট করতে হচ্ছে।’

আরেক নৈশপ্রহরী ইয়াসিন আলী বলেন, ‘যে শীত পড়েছে, তাতে রাস্তাঘাটে বের হওয়া যাচ্ছে না। এর মধ্যেও আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। জ্বর-শর্দি-কাশি-বুক ব্যথাসহ নানা ধরনের অসুখে হচ্ছে।’

হিলি-৩

দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদফতরের ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামান জানান, দিনাজপুর অঞ্চলে দিন দিন তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। গতকাল যেখানে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সেখানে আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৯টায় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ।

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর-এ আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এ পর্যন্ত যে পরিমাণ শীতবস্ত্র পাওয়া গেছে, সেগুলো উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের শীতার্ত মানুষদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। শীতের মাত্রা আরও বাড়ছে, যে কারণে আরও দেড় হাজার কম্বলের চাহিদা জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এসব পাওয়া গেলে পৌর এলাকাসহ অন্য শীতার্ত মানুষদের মাঝে বিতরণ করা হবে।’