হিলি দিয়ে সাত মাসে এলো ১৯১ কোটি টাকার ভুট্টা

দেশের বাজারে চাহিদা থাকায় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গত জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে ১৯১ কোটি ৯০ লাখ টাকার ৫৭ হাজার মেট্রিক টন ভুট্টা আমদানি হয়েছে। একই সময়ে গত অর্থবছরে ৫৬২ ট্রাকে ২৩ হাজার ৩৮৯ টন ভুট্টা আমদানি হয়েছিল।

এদিকে, বন্দর দিয়ে আমদানি অব্যাহত থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে ভুট্টার দাম কমেছে কেজিতে দুই-তিন টাকা। দাম কমায় কিছুটা আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন আমদানিকারকরা।

স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস গত জুলাইয়ে ২৫৬ ট্রাকে ৯ হাজার ৮৫৯ টন ভুট্টা আমদানি হয়েছিল। আগস্ট মাসে ১০৭ ট্রাকে চার হাজার ৩৩১ টন, সেপ্টেম্বর মাসে ১৩ ট্রাকে ৫০৮ টন, অক্টোবর মাসে ১৮৮ ট্রাকে সাত হাজার ৬৮৮ টন, নভেম্বর মাসে ৪৭৪ ট্রাকে ১৯ হাজার ৬৬৫ টন, ডিসেম্বর মাসে ১৬৫ ট্রাকে ছয় হাজার ৮৬৩ টন, জানুয়ারি মাসে ২০১ ট্রাকে আট হাজার ৫৩৯ টন ভুট্টা আমদানি হয়েছে। সবমিলে গত সাত মাসে এক হাজার ৪০৪ ট্রাকে ৫৭ হাজার ৪৫৩ টন ভুট্টা আমদানি হয়েছে। 

হিলি স্থলবন্দর থেকে ফিডমিলগুলোর চাহিদা অনুযায়ী ভুট্টা সরবরাহ করি জানিয়ে ভুট্টা সরবরাহকারী বেলাল হোসেন বলেন, ‘সপ্তাহের ব্যবধানে ভুট্টার দাম কেজিতে দুই-তিন টাকা কমেছে। গত সপ্তাহে যে ভুট্টার কেজি ৩৭-৩৮ টাকা কিনে ফিডমিলগুলোতে পাঠিয়েছিলাম, সেগুলো এখন ৩৫-৩৬ টাকায় সরবরাহ করছি। তবে দাম কমলেও ফিডমিলগুলো ভুট্টা কেনা কমিয়ে দিয়েছে। আগে প্রতিদিন দুই-তিন ট্রাক ভুট্টা বিভিন্ন ফিডমিলে পাঠাতাম। এখন দিনে এক ট্রাক পাঠাচ্ছি। এর কারণ হলো ফিডমিলগুলো চাহিদা মতো ভুট্টা কিনে মজুত করেছে। এর ওপর দেশি ভুট্টা বাজারে উঠতে শুরু করেছে। ফলে ফিডমিলগুলো ভুট্টা কেনার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে।’

স্থলবন্দরের ভুট্টা আমদানিকারক সারোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন ফিডমিলে পর্যাপ্ত ভুট্টার চাহিদা আছে। সে চাহিদা আমদানিকৃত ভুট্টা দিয়েই মিটতো। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বৈশ্বিক নানা সংকটের কারণে ওসব দেশ থেকে ভুট্টা আমদানি বন্ধ আছে। বর্তমানে ভারত থেকে প্রতি মেট্রিক টন ভুট্টা ৩১০ থেকে ৩২৫ ডলার মূল্যে আমদানি করা হচ্ছে। সব খরচ মিলিয়ে বন্দরে পৌঁছা পর্যন্ত প্রতি কেজি ভুট্টা ৩৪ টাকার ওপরে দাম পড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘আগে দাম কিছুটা বেশি থাকলেও বর্তমানে কমতে শুরু করেছে। আগে প্রতি কেজি ভুট্টা ৩৭-৩৮ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে ৩৫-৩৬ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এর মূল কারণ হলো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের দেশি ভুট্টা বাজারে উঠতে শুরু করেছে। কয়েকদিনের মধ্যে দেশের প্রায় সব অঞ্চলের ভুট্টা বাজারে উঠবে। সরবরাহ বাড়লে দাম আরও কমবে। ইতোমধ্যে অনেক ফিডমিল ভুট্টা কেনা কমিয়ে দিয়েছে।’

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ভুট্টার আমদানি অব্যাহত আছে। তবে আমদানির পরিমাণ কিছুটা কমেছে। আগে বন্দর দিয়ে প্রতিদিন পাঁচ-সাত ট্রাক ভুট্টা আমদানি হতো। বর্তমানে দুই-তিন ট্রাক আমদানি হচ্ছে। আমদানিকারকরা যাতে নির্বিঘ্নে বন্দর থেকে ভুট্টা খালাস করে নিতে পারেন, সেজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।’