একটি ঘর চান বৃদ্ধা ছকিনা

জরাজীর্ণ আর ফাটল ধরা মাটির ঘরে ঝুঁকি নিয়ে বাস করতে হচ্ছে দিনাজপুরের হিলির চন্ডিপুর গ্রামের ৭০ বছরে বৃদ্ধা ছকিনা বেগমের। ফাটল ধরা মাটির একটি ঘরই তার সম্বল। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে ছকিনার চাওয়া নিজের একটি ঘর।

সরেজমিনে হিলির চন্ডিপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে ঝোপঝাড় আর জরাজীর্ণ পরিবেশে বাস করছেন ছকিনা। পুরনো ফাটল ধরা মাটির একটি ঘরেই ঝুঁকি নিয়ে বাস করে আসছেন তিনি।

ছকিনা জানান, আকাশে মেঘ দেখলেই তার মন আঁতকে ওঠে। বৃষ্টিতে ফাটল ধরা মাটির ঘর যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। প্রতিবেশীদের দেওয়া খাবার খেয়ে বেঁচে আছেন। বিভিন্ন রোগে ওষুধ জোগাড় করা তার জন্য অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ছকিনার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে অনেক আগে। একমাত্র ছেলে ঢাকায় থেকে শ্রমিকের কাজ করেন। মায়ের খোঁজ নেন না। দুই মেয়ের অভাব-অনটনের সংসার। মাঝে মাঝে তারা সাধ্যমতো সহযোগিতা করেন।বর্তমানে সরকারের দেওয়া বয়স্ক ভাতার টাকা আর প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় তিনি বেঁচে আছেন।

ফাটল ধরেছে ছকিনা বেগমের ঘরে

প্রতিবেশী সেলিনা বেগম বলেন, ‘ছেলেমেয়ে থেকেও যেন তার কেউ নেই। অনেক কষ্টে দিন কাটে অসহায় ছকিনা বেগমের। একমাত্র ছেলে মায়ের খোঁজ নেয় না। এখন প্রতিবেশীরা কেউ একবেলা খাবার দেয়, কেউ হয়তো চাল দেয়। তা দিয়ে কোনও রকমে কষ্ট করেই জীবন চলছে ছকিনার।

হাকিমপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ বলেন,‘বিষয়টি জেনেছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তার জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।’

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ আলম বলনে, ‘খবর পেয়ে ইতোমধ্যেই ছকিনা বেগমের বাড়ি পরিদর্শন করেছি। অনেক কষ্ট আর মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন ওই বৃদ্ধা। একটি মাত্র মাটির ঘর আছে তার, তাও ফাটল ধরা।’

ইউএনও আরও বলেন, ‘সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পে ওই বৃদ্ধাকে একটা ঘর দেওয়ার কথা বলা হলেও নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে সেখানে তিনি যেতে চান না। যেহেতু বৃদ্ধা একাই থাকেন তাই তার অসুখ হলে তাকে কে দেখবে এমন নিরাপত্তার ভয়ে তিনি সেখানে যেতে চান না। তবে জমি আছে ঘর নেই এমন প্রকল্প আসলে ওই বৃদ্ধাকে একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে।’