আদালত অবমাননার দায়ে এক মাস কারাভোগ শেষে মুক্তি পেয়েছেন দিনাজপুর পৌরসভার সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মেয়র বিএনপি নেতা সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে কারামুক্ত হন তিনি। পরে কারাগারের প্রধান ফটকে দাঁড়িয়ে থাকা এক আত্মীয়ের মোটরসাইকেলে চড়ে বাসায় যান। তবে এ সময় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কোনও কথা বলেননি তিনি।
জাহাঙ্গীর আলম বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক। টানা তৃতীয় মেয়াদে দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আপিল বিভাগের বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিমকে নিয়ে ইউটিউবে জাহাঙ্গীরের এক বক্তব্যের সূত্রে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের চার আইনজীবী। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা মামলায় হাইকোর্টের রায়কে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীর ওই বক্তব্য দেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ আগস্ট আপিল বিভাগ জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিশ ইস্যু করেন। পাশাপাশি ২৪ আগস্ট তাকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। নির্ধারিত দিনে আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করলে আপিল বিভাগ গত ১২ অক্টোবর শুনানির দিন ধার্য করেন। ওই দিন আদালতে হাজির হলে জাহাঙ্গীরকে এক মাসের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও সাত দিনের কারাদণ্ড দেন আপিল বিভাগ। পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে দিনাজপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। ১৮ অক্টোবর দিনাজপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন জাহাঙ্গীর। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
এদিকে, কারাগারে যাওয়ার পর জাহাঙ্গীর আলমকে ৩১ অক্টোবর দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়ে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. আবদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯-এর ধারা ৩১(১) অনুযায়ী সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি আদালত অবমাননার দায়ে দণ্ডিত। পৌরসভা বা রাষ্ট্রের হানিকর কার্যকলাপে জড়িত থাকা, নৈতিক স্খলন, অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে তাকে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।