টিসিবির পণ্য নিতে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের মারধরে আহত দিনমজুর

গাইবান্ধা সদর উপজেলায় টিসিবির (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) পণ্য নিতে গিয়ে এক ইউপি চেয়ারম্যানের কিল-ঘুষিতে আহত হয়েছেন মোজাহিদুল ইসলাম (৪৫) নামে এক দিনমজুর। আহত মোজাহিদুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্ত্রী রুমা বেগমের নামের টিসিবির কার্ডের মালামাল নিতে ৬ নম্বর রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদে গেলে এই হামলার শিকার হন ওই দিনমজুর। আহতের অভিযোগ, চেয়ারম্যান মোসাব্বির হোসেন তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তিনি কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে তাকে ধাক্কিয়ে-ধাক্কিয়ে পরিষদ থেকে বের করে দেন চেয়ারম্যান।

এদিকে, ঘটনার সময়ে এক প্রত্যক্ষদর্শীর ধারণ করা একটি ভিডিও চিত্র ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাত ১০টার দিকে ছড়িয়ে পড়ে ১২ সেকেন্ডের ওই ভিডিও। এর আগে, বিকাল ৫টার দিকে হামলার এই ঘটনা ঘটে রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে।

আহত মোজাহিদুল ইসলাম রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের বড় মহানন্দপুর গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে। তার স্ত্রী রুমা বেগমের নামে একটি টিসিবির কার্ড রয়েছে। যার কার্ড নম্বর-৩২১২৪৮১০০২১৫২।

ভিডিওতে দেখা যায়, চেয়ারম্যান মোসাব্বির পরিষদে থাকা বেশ কিছু লোকজনদের বের করে দিচ্ছেন। এ সময় গেটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা মোজাহিদুলকে লক্ষ্য করে মাথায়, বুকে ও পিঠে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন চেয়ারম্যান। শুধু তাই নয়, মোজাহিদুলকে ধাক্কা দিতে দিতে বের করে দেন তিনি।

গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর মোজাহিদুল জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকেই রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদে টিসিবির কার্ডের মালামাল দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু বিকাল ৩টার দিকে সর্বশেষ প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ জন কার্ডধারীকে মাল দিতে সময়ক্ষেপণ করেন টিসিবির সংশ্লিষ্ট ডিলার। পরে চেয়ারম্যান মোসাব্বির হোসেন ও সংশ্লিষ্ট ডিলারের পক্ষ থেকে উপস্থিত সবাইকে অপেক্ষা করতে বলেন। কিন্তু অপেক্ষা করেও বিকাল ৫টা পর্যন্ত মাল পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে উপস্থিত কার্ডধারীদের মাঝে হইচই শুরু হয়। এতেই চেয়ারম্যান মোসাব্বির ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।

মোজাহিদুলের অভিযোগ, চেয়ারম্যান মোসাব্বির তার ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এ সময় তিনি মাথা, বুক ও পিঠে ঘুষি মারতে থাকেন। এরপর তিনি ধাক্কা মারতে মারতে পরিষদ থেকে বের করে দেন। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন বলেও জানান তিনি।

অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা জানান, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি চেয়ারম্যান মোসাব্বির হোসেনকে। এমনকি মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।