সাঁওতাল নারীকে মারধরের পর বাড়িতে আগুন, চেয়ারম্যান রফিকুলকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সাঁওতাল নারীকে মারধর ও বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে উপজেলা বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

রবিবার (০৫ জানুয়ারি) জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. মইনুল হাসান সাদিক ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন নবী টিটুল স্বাক্ষরিত নোটিশে তাকে বহিষ্কার করা হয়। রফিকুল ইসলাম রাজাহার ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মাহমুদুন নবী টিটুল বলেন, ‘সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রফিকুল ইসলামকে দলীয় সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’

এর আগে গত শুক্রবার সকালে রাজবিরাট আদিবাসী পাড়ার ফিলোমিনা হাঁসদা (৫৫) নামে এক সাঁওতাল নারীকে মারধর এবং সেই রাতে তার বাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ ওঠে চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শনিবার রাতে গোবিন্দগঞ্জ থানায় চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তার ভাইসহ ছয় জনকে আসামি করে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারীর ছেলে জুলিয়াস সরেন। 

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাঙালি মালিকের কাছ থেকে কেনা ১৬ শতক জমিতে মাটি ভরাট করতে গেলে ওই নারীর ছেলে ব্রিটিশ সরেনসহ কয়েকজন সাঁওতাল বাধা দেন। আমার লোকজন তাদের তাড়িয়ে দেন। স্থানীয় অনেকে দেখেছেন কারা বাড়িতে আগুন দিয়েছে। অথচ তারা আমাকে ফাঁসিয়েছে।’

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ বাগদা-ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে বলেন, ‘আগে রাজাবিরাট গ্রামে অনেক সাঁওতাল পরিবার ছিল। স্বাধীনতার পর থেকে সাঁওতালদের প্রায় ২৫০ বিঘা জমি স্থানীয় বাঙালিরা নানাভাবে দখলে নিয়েছে। সেই কারণে সেখান থেকে অনেক সাঁওতাল পরিবার নিয়ে অন্য জায়গায় চলে গেছে। এই সুযোগে চেয়ারম্যান জমি দখলের পাঁয়তারা করছেন। চেয়ারম্যান ও তার লোকজন পরিকল্পিতভাবে ব্রিটিশ সরেনের মাকে মারধর ও বাড়িতে আগুন দিয়েছে।’